রিকশাচালক থেকে জনপ্রিয় গায়ক হয়ে ওঠা আকবরকে চেনেন না এমন সংগীতপ্রেমী খুব কমই পাওয়া যাবে। নন্দিত সংগীতশিল্পী কিশোর কুমারের গাওয়া ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে’ গানটি ইত্যাদির মঞ্চে গেয়ে ১৫ বছর আগে রাতারাতি পরিচিতি পেয়েছিলেন তিনি।
Advertisement
হানিফ সংকেতের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে এই গান তাকে আলোচনায় নিয়ে আসে। এরপর ‘তোমার হাতপাখার বাতাসে’ গানটি দেশ-বিদেশের দর্শক-শ্রোতার কাছে প্রচুর ভালোবাসা পেয়েছেন তিনি। এরপর গানের সঙ্গে কেটেছে তার জীবন। করোনায় ঘরবন্দি হয়ে বিপাকে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ।
সম্প্রতি এক ফেসবুক স্ট্যাসের মাধ্যমে আকবর জানিয়েছিলেন, করোনার লকডাউনে বন্দি হয়ে ভীষণ অভাবের মধ্যে দিন কাটছে তার। এরপর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় আকবরের বর্তমান অবস্থার সংবাদ। এই গায়ক জানিয়েছিলেন, ‘তার ঘরের খাবার ফুরিয়ে গেছে, নেই খাবার কেনার টাকাও।
আকবরের এমন দূর অবস্থার খবর পেয়ে তার পাশে দাঁড়িয়েছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি ও ঢাকা জেলার জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান, মিরপুর জোনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ মোরাদ আলীসহ আরও অনেকেই। এমনভাবে মানুষের ভালোবাসা পেয়ে অবাক হয়েছেন এই শিল্পী।
Advertisement
সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আকবর বলেন, ‘করোনার পরিস্থিতির আগে থেকেই আমি খুব একটা ভালো নেই। গণমাধ্যমের ভাইয়েরা আমার খোঁজ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন। এরপর বাসায় খাবার নিয়ে এসেছেন অনেকেই। এমন অবস্থা হয়েছে, বাসায় খাবার রাখার যেনো জাইগা নেই। আমি পরিমাণ মতো খাবার রেখে বাকিটা বিতরণ করে দিচ্ছি, আমার চারপাশের আরও যারা অসহায় মানুষ আছেন, তাদের মধ্যে। তারাও কষ্টে আছেন ভীষণ। আমার অবস্থা জেনে এভাবে সবাই পাশে দাঁড়াবে ভাবতে পারনি’।
আকবর জানান, ঢাকা জেলার জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান বিকাশে তাকে ১০ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন। এ ছাড়া মিরপুর জোনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ মোরাদ আলী ২০ কেজি চাল, ১০ কেজি আলু, ২ কেজি ডাল পাঠিয়েছেন।
উল্লেখ্য, আকবর তার পরিবার নিয়ে ঢাকার মিরপুর ১৩ নম্বরে স্ত্রী, দুই পুত্র ও এক কন্যাকে বসবাস করছেন। গত বছরের শুরুর দিকে অসুস্থ হয়ে বেশ কিছুদিন হাসপাতালে থাকতে হয় আকবরকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পরিবারকে ২ লাখ টাকার চেক ও ২০ লাখ টাকা সঞ্চয়ীপত্র করে দেন।
২০ লাখ টাকার সঞ্চয়ীপত্রের মুনাফা দিয়ে তার চিকিৎসা ও সংসার খরচ চলে। হিসেবে তিন মাস পরপর ৪৯ হাজার টাকা ব্যাংক থেকে তোলেন আকবর। সেই টাকার একটি অংশে (প্রতিমাসে ১৬ হাজার ৩০০ টাকায়) প্রতি মাসের খরচ চলে তার। কিন্তু নানা খরচ বেড়ে যাওয়ায় লকডাউনের মধ্যে অর্থসংকটে পড়েন তিনি।
Advertisement
এমএবি/এমআরএম