দেশের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনসহ নানান কারণে দেশে বিদেশে ইমেজ সঙ্কটে পড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এদিকে, আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়েছে বিএনপি। দেশের ন্যায় বিদেশেও দলকে গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নেতা কর্মীরা। বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক হাওয়া সমান্তরালেই বয়ে চলে মালয়েশিয়ায়। জন্মভূমির টানেই ঘরোয়া পরিবেশে সভা সেমিনার করে আসছে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠন দলগুলো।মালয়েশিয়ায় ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী ও শ্রমিকরা অংশগ্রহণ রয়েছে রাজনীতিতে। কাগজে কলমেই দেশটিতে প্রায় সাড়ে সাতলাখ বাংলাদেশি বাস করে। প্রবাসে দলীয় রাজনীতিকে চাঙা করতে দেশের সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় কমিটিও বেশ গুরুত্ব দেয়ায় নতুন কৌশলে এগুচ্ছে দলটি। দল গোছানোর পাশাপাশি নতুন করে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদারের উদ্যোগ নিচ্ছে মালয়েশিয়া বিএনপি। এক্ষেত্রে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে সবার্ধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোকে বাইরে রেখে কোনো ধরনের কূটনীতিই সফলতার মুখ দেখবে না। প্রবাসের রাজনীতি দেশে প্রভাব ফেলে, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। প্রবাসী বিএনপি নেতারা বলেন, তারেক রহমানকে সরকার ভয় পায়। আর সে কারণেই তাকে দেশে ফিরতে দিচ্ছে না। সরেজমিন পূর্ব এশিয়ার রাজধানী মালয়েশিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে দেখা গেছে বাঙালি কমিউনিটিতে বিএনপিই সংখ্যাগরিষ্ঠতা বেশি। নেতাকর্মীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে দলকে এগিয়ে নিতে কাজ করছেন। তারা বলেন, ‘বিএনপির রাজনীতি শুধু দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, আন্তর্জাতিকভাবে সব দেশের সঙ্গেই বিএনপির কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। শুধু একটি দেশ ছাড়া সব দেশের কূটনীতিকরা বারবারই বলছেন, আলোচনার মাধ্যমে সব দলের অংশগ্রহণে বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া জরুরি বলে মনে করছেন তারা। এর আগে বিএনপি চেয়ারপারসন ও তারেক রহমানের নির্দেশে দলের হাইকমান্ড ৬ অক্টোবর সবার সমন্বয়ে ১২১ সদস্য বিশিষ্ট একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর। পূর্ণাঙ্গ কমিটির খবর যখন দৈনিক বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত হয় তখন মালয়েশিয়া বিএনপির নেতৃবৃন্দ সর্বত্র মিষ্টি বিতরণের মধ্য দিয়ে নতুন কমিটিকে স্বাগত জানায়। চারদিকে খুশির উচ্ছ্বাস নেমে আসে। তখনই বাধ সাজেন কমিটির সহসভাপতি মোহাম্মাদ শহীদ উল্লাহ শহিদ কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেন। নবগঠিত কমিটির নেতারা ভিন্ন রাজনীতিতে জড়িত । একই সঙ্গে এ কমিটিকে পুনর্বিবেচনা করারও আহ্বান জানান তিনি। ৮ অক্টোবর কুয়ালালামপুরে স্থানীয় সময় রাত ১০টায় ওই কমিটির বিরুদ্ধে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে এ কথা বলেন। শহীদ বলেন, এ কমিটি জাতীয়তাবাদী দলের কমিটি হতে পারে না কারণ এ কমিটিতে স্থান পায়নি বিভিন্ন জেলা কমিটির কোনো সদস্য। একে মূল কমিটি না বলে আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে গঠিত পকেট কমিটি বলা যেতে পারে।তিনি আরো বলেন, বিগত এবং বর্তমান সময়ে এসব নেতাদের প্রধান ব্যবসায়ীক পার্টনার আওয়ামী লীগ নেতারা। দলের মধ্যে গ্রুপিং, মারামারি, দালাল দিয়ে শ্রমিক আটকসহ দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজিও করেছেন তারা। এ সময় তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ২০১৪ সালের ২০ আগস্ট মালয়েশিয়া শাখা বিএনপির ১৬১ সদস্যের প্রস্তাবিত কমিটি স্বহস্তে গ্রহণ এবং অনুমোদনের পর সেই কমিটি বিলুপ্ত না করে নতুন কমিটি কিভাবে অনুমোদন দিয়েছেন আমারা বুঝি না।নবনির্বাচিত কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক কাজী সালাউদ্দিন বলেন, এতদিন থেকে মালয়েশিয়ায় যারা বিএনপির বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে তাদের মূল্যায়ন না করে একেবারে অপরিচিত লোকদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে।এরই প্রেক্ষিতে নব গঠিত কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার বাদলুর রহমান খান বাদল বলেন, পদ বঞ্চিত একটা গ্রুপ কেন্দ্রের অনুমোদিত এই কমিটির বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছে। কমিটির বিরুদ্ধে এবং নেতাদের বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট বলে অভিহিত করেন তিনি।বাদল বলেন, মালয়েশিয়া বিএনপি দেশের মানুষের ও প্রবাসীদের মৌলিক অধিকার আদায়ে কাজ করে যাবে। দেশের দুঃসময়ে সবচেয়ে বেশি দরকার শৃঙ্খলা ও ঐক্যের। দলের যে কোনো পর্যায়ের কোন সদস্য যদি ঐক্য ও শৃঙ্খলা ভঙ করেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।এসকেডি/এমএস
Advertisement