কুমিল্লায় আটকে পড়া শ্রমিকদের তৃতীয় দফায় চারটি বাসযোগে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বরেন্দ্র এলাকা এবং কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে ধান কাটার জন্য পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ১৭২ জন শ্রমিককে নগরীর শাসনগাছা থেকে এসব এলাকায় পাঠানো হয়। এ সময় জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর ও পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে তাদেরকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জীবাণুনাশক স্প্রে করে বাসে ওঠানোসহ করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়। প্রত্যেক শ্রমিককে থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে তাপমাত্রা নির্ণয় করা হয় এবং মাস্ক ও শুকনা খাবারের প্যাকেট দেয়া হয়।
গাড়িতে ওঠার আগে শিবগঞ্জের বাসিন্দা ইটভাটার শ্রমিক সাঈদুর, নগরীতে ঢালাই ও রাজমিস্ত্রির কাজ করা মোহাম্মদ আলী, সেলিম, আল আমিন এবং খলিল জানান, করোনার কারণে বেশ কয়েকদিন ধরে কোনো কাজ না পেয়ে খাবার সঙ্কটে পড়েছিলেন। পুলিশের এমন উদ্যোগের কারণে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে ধান কাটার কাজে নেমে পড়বেন তারা।
Advertisement
গাড়িতে ওঠার আগে শ্রমিকরা প্রশাসনের এমন উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, ডিসি-এসপি এখানে না আসলেও পারতেন। কিন্তু তারা আমাদের গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে হাত নেড়ে বিদায় দেন। পুলিশের আচরণে আমরা মুগ্ধ হয়েছি।
এ বিষয়ে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আবুল ফজল মীর বলেন, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন ঘোষণার পর গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কুমিল্লায় আটকা পড়েন এসব শ্রমিক। দেশের কৃষি কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আটকা পড়া শ্রমিকদের ধান কাটতে পাঠানো হয়েছে। কারণ বরেন্দ্র ও হাওর এলাকায় পর্যাপ্ত কৃষি শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ে কৃষকের পাকা ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সোমবার রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জে ১৩০ জন এবং কিশোরগঞ্জে ৪২ জনসহ ১৭২ জন শ্রমিককে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে দুই দফায় এই জেলায় বিভিন্ন সময়ে এসে আটকে পড়া ৮৯ জন শ্রমিককে বরেন্দ্র এলাকায় পাঠানো হয়েছে।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, কুমিল্লায় আটকা পড়া শ্রমিকদের ধান কাটার জন্য বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়েছে। তাদের সব ধরনের সহায়তা করেছে পুলিশ।
এ সময় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন, সাখাওয়াত হোসেন, আজিম উল আহসান, তানভীর সালেহীন ইমন, নাজমুল হাসান রাফী, ডিআইও-ওয়ান মাঈনুদ্দিন, ডিবির ওসি আনোয়ারুল আজিম ও পরিবহন নেতা তাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
মো. কামাল উদ্দিন/এএম/এমএস