রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাতের মাস রমজান। আল্লাহর অশেষ রহমতে রমজানের রোজা পালনের মাধ্যমে দিনগুলো অতিবাহিত করার সৌভাগ্য পাচ্ছি, আলহামদুল্লিাহ। বিশেষ করে রমজান মাসের নফল ইবাদতকে ফরজের মর্যাদা দেয়া হয় তাই বেশি বেশি নফল ইবাদত করা উচিত।
Advertisement
নফল ইবাদতের মাধ্যমে ফরজ ইবাদতের ভুল-ত্রুটিগুলো পূর্ণ করে দেয়। রমজান মাসের যে নফল ইবাদতের মধ্যে বিশেষ ইবাদত হচ্ছে রাতের তারবিহ নামাজ। তারাবিহ আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো বিশ্রাম বা আরাম। দীর্ঘ কেরাতে তারাবিহ আদায় করা হতো বিধায় ৪ রাকাআত পরপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম বা আরাম গ্রহণ করে আবার এ নামাজ পড়া হতো। তাই দীর্ঘ কেরাআতে তারাবিহ পড়া উত্তম ও ফজিলতপূর্ণ।
রমজান মাসে যেন সবাই রাতের এ বিশেষ নামাজ তারাবিহ-এর ফজিলত ও মর্যাদা লাভ করতে পারে সে সুবিধার্থে রাতের প্রথম ভাগে অর্থাৎ, ইশার নামাজের পরপরই এ নামাজ পড়ে মুমিন মুসলমান।
বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ নিজ ঘরকেই মসজিদে পরিণত করে নিয়েছে। ঘরেই আদায় করছেন পাঞ্জেগানা নামাজ এবং ফজিলতপূর্ণ তারাবিহ নামাজ। অনেকেই রাত জেগে দীর্ঘ কেরাতে বিশেষ নফল ইবাদত তারাবিহ আদায়ে গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকছে মুমিন মুত্তাকি বান্দা। কেননা রমজানের নফল ইবাদতের গুরুত্ব অনেক বেশি। তারাবিহ নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে-রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সাওয়াবের নিয়তে রমজানের তারাবিহর নামাজ আদায় করে তার আগের সব গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।' (বুখারি ও মুসলিম)
Advertisement
এ হাদিস থেকে বুঝা যায় তারাবিহ নামাজ কতটা গুরুত্বপূর্ণ। হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-‘আমাদের প্রভূ যিনি সব কল্যাণের মালিক এবং সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী, তিনি প্রতি রাতে এমন সময় দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন যখন রাতে এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকে আর বলেন, কে আছো? আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সারা দেব, কে আছো? আমার কাছে প্রার্থনা কর, আমি তাকে দান করবো এবং কে আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো? আর আমি তাকে ক্ষমা করে দেব।' (বুখারি)
রমজান মাসে রাত জেগে যারা তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন এবং অপরকে এ ব্যাপারে উৎসাহিত করেন, তাদের জন্য আল্লাহর কাছে রয়েছে সম্মানের স্থান। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-‘আল্লাহ ওই ব্যক্তির ওপর রহমত নাজিল করেন, যিনি রাতে ঘুম থেকে উঠে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন এবং তার স্ত্রীকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেন। অতপর তিনি (স্ত্রী) তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন। এমনকি যদি তিনি (স্ত্রী) ঘুম থেকে জাগ্রত হতে না চান, তাহলে তার মুখে পানি ছিটিয়ে দেন।’ (আবু দাউদ ও নাসাঈ)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মুসলমানদের মধ্যে আল কুরআনে অভিজ্ঞ ও তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারী ব্যক্তি সম্মানের অধিকারী হবেন।’ (বায়হাকি)
রমজানের এ মর্যাদাপূর্ণ মাসে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি ও ভালোবাসা লাভে বেশি বেশি নফল ইবাদত একান্ত প্রয়োজন। আমরাও যেন পবিত্র এই রমজানে ফরজ ইবাদতের পাশাপাশি বেশি বেশি নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ নৈকট্য বান্দাদের সঙ্গী হতে পারি, সেই তাওফিক আমাদের দান করুন।' আমিন।
Advertisement
এমএমএস/পিআর