করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র আবিষ্কৃত কিট অনুমোদনের জন্য গ্রহণ করেনি ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর, এমনই অভিযোগ তুলেছেন কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেছেন ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান।
Advertisement
সোমবার (২৭ এপ্রিল) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্য মিডিয়া সেল আয়োজিত কোভিড-১৯ পরীক্ষার কিট সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন।
রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছিলেন, ‘ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর নানা অজুহাত দেখিয়ে গণস্বাস্থ্যের কিট গ্রহণ করেনি। আমরা জনগণের স্বার্থে শুধু সরকারের মাধ্যমে পরীক্ষা করে কিটটি কার্যকর কি না- তা দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সরকারিভাবে প্রতি পদে পদে পায়ে শিকল দেয়ার চেষ্টা হয়েছে।’
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের ডিজি বলেন, ‘২৬ এপ্রিল (রোববার) ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরে ওনাদের (গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র) একটি প্রতিনিধি দল আসে। আমি চাচ্ছিলাম, টোটাল প্রসেসটাকে ফ্যাসিলেটেড করতে, যেন তাড়াতাড়ি হয়। আইসিডিসিআরবির সিআরও (কন্ট্রাক্ট রিসার্চ অর্গানাইজেশন) আছে। আরও একটি প্রতিষ্ঠান ডেকেছিলাম ওনারা যদি সিআরওর মাধ্যমে করতে চান, যদি এদের মাধ্যমে হয়, তবে বিষয়টি ফ্যাসিলেটড হতে পারে।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘এরমধ্যে গণস্বাস্থ্য থেকে তিনজন আসেন। দু’জন প্রথমে ঢোকেন। আরেকজন আসেন। সামাজিক নিরাপত্তার জন্য ছয়টি চেয়ার ভিন্ন ভিন্নভাবে রাখা ছিল। আরেকজনকে পাশের রুমে বসানো হয়। আমি বলব, তাদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়। রেগুলেটরি পাথওয়ে ওনারা পুরোপুরি ফলো করতে চান। তারা বলেন, তারা আইসিডিডিআরবির মাধ্যমে করবেন। পরে তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) করতে চান। আমি বললাম- বিএসএমএমইউ, আইইডিসিআর এবং আইসিডিডিআরবিতে আপনারা এটি করতে পারেন।’
আইসিডিডিআরবির গবেষণাগার খোলার থাকার পরও তারা সেখানে পরীক্ষা করতে চান না জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, ‘তখন আমরা বললাম, ৯টি সিআরও আছে, লিস্টটা আমরা দিলাম। আপনারা যেটাতে খুশি করতে পারেন। এভিডেন্স নামের সিআরওতে তারা করাতে চান। আমরা একটা চিঠিও দিয়ে দিলাম। চিঠি নিয়ে ওনারা চলে গেছেন। আমি মনে করেছি, সবকিছুর ফয়সালা হয়ে গেছে, এখন চমৎকারভাবে কাজটা এগোবে।’
তিনি বলেন, ‘পরে ৪টার সময় তারা সংবাদ সম্মেলনে কি ধরনের কথাবার্তা বলেছেন। আমাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করা হয়েছে।’
সিআরওর মাধ্যমে ট্রায়াল পরিচালনা করে সেই রিপোর্ট বিএমআরসি (বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ) হয়ে অধিদফতরের উপদেষ্টা কমিটির পর্যালোচনার পর রেজিস্ট্রেশন দেয়া হয় বলে জানান মহাপরিচালক।
Advertisement
এ পদ্ধতির খরচও স্পন্সর বহন করে থাকে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রটোকল রিভিউর জন্য আমরা ফি পর্যন্ত নিই না। উনি যে অত্যন্ত অবজেকশনাবল একটি কথা বলেছেন, আমরা কি ঘুষ দেব? ঘুষের প্রশ্ন এখানে কীভাবে আসে।’
উল্লেখ্য, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র আবিষ্কৃত কিটের নাম দেয়া হয়েছে ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লট’। শনিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিটটি হস্তান্তর করে প্রতিষ্ঠানটি। তবে কিট গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানোর পরও যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার্স ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) ছাড়া গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত এ কিট গ্রহণের জন্য যায়নি সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠান। পরদিনই এ বিষয়ে কথা বলতে ফের সংবাদ সম্মেলন ডাকেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি।
আরএমএম/এফআর/এমএস