জাতীয়

গণস্বাস্থ্যকে সর্বাত্মক সহযোগিতায় প্রস্তুত ছিলাম, এখনও আছি

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে সর্বাত্মক সহযোগিতায় প্রস্তুত ছিলেন, এখনও আছেন বলে জানিয়েছেন ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান।

Advertisement

করোনাভাইরাস শনাক্ত করার আবিষ্কৃত কিট অনুমোদনের ক্ষেত্রে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এমন অভিযোগের পর অধিদফতরের শীর্ষ কর্মকর্তা এ কথা জানান।

সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্য মিডিয়া সেল আয়োজিত কোভিড-১৯ পরীক্ষার কিটস সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

এর আগে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর ব্যবসায়িক স্বার্থে জাতীয় স্বার্থের বিপক্ষে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর নানা অজুহাত দেখিয়ে গণস্বাস্থ্যের কিট গ্রহণ করেনি। আমরা জনগণের স্বার্থে শুধু সরকারের মাধ্যমে পরীক্ষা করে কিটটি কার্যকর কি না- তা দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সরকারিভাবে প্রতি পদে পদে পায়ে শিকল দেয়ার চেষ্টা হয়েছে।

Advertisement

এর পরদিনই সংবাদ সম্মেলনে এলেন ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিচালক। তিনি বলেন, ‘উনি (জাফরুল্লাহ চৌধুরী) বিভিন্ন সময়ে সংবাদ সম্মেলন করে স্বাস্থ্য অধিদফতর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং আমাদের ওষুধ প্রশাসনকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছেন। আমি অতি বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, আমাদের দেশে এই মুহূর্তে প্রত্যেক মানুষের সহযোগিতা খুব দরকার। সবার। তাদেরও দরকার। গণস্বাস্থ্যের সহযোগিতা আমাদের দরকার। সবাই মিলে আমাদের সমস্যা সমাধান করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এখন যদি অযাচিতভাবে অসত্য তথ্য উপস্থাপন করে মানুষকে তথা প্রতিষ্ঠানকে হেয়প্রতিপন্ন করার প্রচেষ্টা চালানো হয়, সেটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এটি আমি প্রত্যাখ্যান করছি। আমি অনুরোধ করব, এ ধরনের অপপ্রচার যাতে না চালানো হয়।’

‘তিনি একজন বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ। তার কাছ থেকে আরও বিজ্ঞানভিত্তিক এবং সৌজন্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি এবং কথাবার্তা আশা করব’, বলেন মহাপরিচালক।

মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ওনারা একটা টেস্ট ডেভেলপ করেছেন। আমাদের দিক থেকে, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের দিক থেকে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত ছিলাম এবং এখনও আছি।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘কিটের রি-এজেন্ট আনার জন্য ১৮ মার্চ আবেদন করেছেন, ১৯ মার্চ অনুমোদন দিয়েছি আনার জন্য। কিট উৎপাদনের কারখানা আমাদের দেখা প্রয়োজন। ২০ তারিখে আমরা কারখানা পরিদর্শনের কথা বলেছিলাম, তাদের পক্ষ থেকে বলা হলো, তাদের ইন্ডাস্ট্রিটা এখনও রেডি নয়। আপনারা ২৭ তারিখে আসেন। এর মধ্যে ছুটি শুরু হয়ে গেল। ২৭ তারিখে আমাদের টিম সেখায়ে যায়। দেখা যায়, তাদের ইকুইপমেন্ট সেখানে ঠিকঠাক মতো স্থাপন করা হয়নি। আমরা ঠিক করতে বলি, তারা বলেছেন অতিসত্বর এগুলো বসাবো। মূল মেশিনটি তখন পর্যন্ত আনাই হয়নি।’

‘এরপর আমরা বলি, তারা ট্রায়াল বেইজ উৎপাদনে যেতে পারে। এ অবস্থার মধ্যেই বিষয়টি ছিল।’

মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা এতদিন জানতাম তারা এন্টিবডি কিট তৈরি করছেন। কিন্তু দু-তিন দিন ধরে তারা বলছেন, ওনারা এন্টিজেনও দেখবেন, রক্ত থেকে এন্টিজেন দেখবেন। আমার অন্তত জানা নেই পৃথিবীর কোথাও রক্ত থেকে এন্টিজেন দেখা হচ্ছে। তারপরও আমরা এটাকে ডিসকারেজ করছি না। যদি সত্যি দেখা যায়।’

কোনো কিছু আবিষ্কার করলে তা অনুমোদন করিয়ে নিতে হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ জন্য একটা নির্ধারিত পদ্ধতি আছে। ওনারা গত ২৫ এপ্রিল একটা কিট হ্যান্ডওভার অনুষ্ঠান করেছিলেন। সেখানে ওনারা আমাদের যাওয়ার জন্য বলেছিলেন। আমরা বলেছিলাম যে, এটা অ্যাপ্রুভড কিট নয়, এটি ট্রায়াল পর্যায়ের কিট। এটি তো হ্যান্ডওভার হয় না। যখন এটি পুরোপুরি অ্যাপ্রুভড হবে তখন বড় করে অনুষ্ঠান করেন। এটি তো হয় না, এ জন্য আমরা সেখানে যাইনি। আমরা নিষেধ করেছিলাম এটি না করার জন্য।’

‘সেই অনুষ্ঠানে ওষুধ প্রশাসন, এমনকি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সম্পর্কে উনি অনেক ধরনের কটূক্তি করেছেন। বিদ্রুপাত্মক কথাবার্তা বলেছেন, যেটি মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।’

আরএমএম/জেডএ/জেআইএম