ইফতারে নানারকম ভাজাভুজি না খেয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্যকর খাবার কোনগুলো সে সম্পর্কে নিশ্চয়ই ধারণা আছে? আজ জেনে নিন তেমনই একটি স্বাস্থ্যকর খাবারের কথা। যার দাম খুব একটা বেশি নয় আবার চাইলে বাড়িতেও তৈরি করে নেয়া সম্ভব। বলছি দইয়ের কথা।
Advertisement
এই সময়ে করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। ইফতারে দই রাখলে সেই পথ অনেকটাই প্রশস্ত হবে।
দইয়ে উপস্থিত উপকারী ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করার পর রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এতটাই শক্তিশালী করে দেয় যে সংক্রমণ থেকে ভাইরাল ফিবার, কোনো কিছুই কাছে ঘেঁষতে পারে না। ফলে সুস্থ জীবনের পথ প্রশস্ত হয়।
দইয়ে থাকা ল্যাকটোব্যাসিলাস অ্যাসিডোফিলাস নামক একটি ব্যাকটেরিয়া শরীরের ক্ষতিকর জীবাণুদের মেরে ফেলে। ফলে ভেজাইনাল ইনফেকশনের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে। এ কারণে নারীদের নিয়মিত দই খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।
Advertisement
দইয়ে প্রচুর ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং জিঙ্কের মতো উপকারী উপাদান রয়েছে। তাই তো নিয়মিত একবাটি করে দই খাওয়া শুরু করলে শরীরে নানাবিধ মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টসের ঘাটতি দেখা দেওয়র আশঙ্কা যায় কমে। ফলে শরীর চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
দই খাওয়ার পর আমাদের মস্তিষ্কের ভেতরে এমনকিছু পরিবর্তন হয় যে মানসিক চাপ এবং অ্যাংজাইটি কমতে শুরু করে। তাই নিয়মিত দই খাওয়ার প্রয়োজনয়ীতা বেড়েছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
দই খেলে শরীরে পটাশিয়াম, ফসফরাস এবং আয়োডিনের ঘাটতি দূর হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ভিটামিন বি৫ এবং বি১২-এর মাত্রাও বাড়তে থাকে। এই সবকটি উপাদানই যে নানাভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে। ভিটামিন বি১২ লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি নার্ভাস সিস্টেমের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
রক্তে খারাপ কোলেস্টরলের মাত্রা কমানোর পাশাপাশি রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয় দই। দই খেলে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
Advertisement
দইয়ে থাকা ল্যাকটোব্যাসিলাস এবং স্ট্রেপটোকক্কাস থ্রেমোফিলাস নামক দুটি ব্যাকটেরিয়া শরীরের ভেতরে ক্যান্সার সেলের জন্ম আটকে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্যান্সারের রোগ ধারেকাছেও ঘেঁষতে পারে না।
দইয়ে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা পাকস্থলিতে হজমে সহায়ক ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। সেই কারণেই তো বদহজম এবং গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যা কমাতে দই খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।
ইউনিভার্সিটি অব টেনেসির গবেষকদের করা একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে, নিয়মিত দই খাওয়া শুরু করলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে কর্টিজল হরমোনের ক্ষরণও কমে যায়। ফলে ওজন হ্রাসের সম্ভাবনা প্রায় ২২ শতাংশ বেড়ে যায়।
দুধের মতো দইয়েও রয়েছে প্রচুর ফসফরাস এবং ক্যালসিয়াম। এই দুটি উপাদান দাঁত এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
এইচএন/জেআইএম