খেলাধুলা

খুলনায় ভালো খেলার প্রত্যয় বাংলাদেশের

২০০৬-এর নভেম্বরের পর খুলনাকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল ছয় বছর। ২০১২-র নভেম্বরে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরে রূপসা তীরের শহরে। পরের ফেরার জন্য অবশ্য প্রতীক্ষার পালা দীর্ঘ হয়নি। মাত্র দুই বছর বাদে ২০১৪ এর আরেক নভেম্বরে যে আবার খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে বসছে ক্রিকেট উৎসব। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে সে উৎসব রাঙিয়ে দেওয়ার দায় এখন মুশফিকুর রহিমের দলের।খেলার কোনো উপলক্ষ মানেই খুলনায় উৎসবের আমেজ। চিরচেনা সে রূপের ব্যতিক্রম নয় এবারও। চারদিকে সাজ সাজ রব। রঙিন আলোর ছটায় ভাসছে খুলনা। পরশু বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে দল শহরে চলে আসায় উৎসবের আবহ বেড়ে গেছে বহু গুণ। তবে তাতে গা ভাসানোর সময় কই দুই দলের! কাল ঘাম ঝরানো অনুশীলনে বরং নিজ নিজ লক্ষ্য পূরণের প্রতিজ্ঞাই ছিল দুই দলের খেলোয়াড়দের। বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের। জিম্বাবুয়ের সিরিজে ফেরার।ঢাকায় প্রথম টেস্ট জিতে সিরিজে সুবিধাজনক অবস্থানে স্বাগতিকরা। আর শুধু তো একটি টেস্ট জয় না, ঢাকার ওই অর্জন বাংলাদেশকে দিচ্ছে খাদের কিনারা থেকে ফেরার উপলক্ষ। যাচ্ছেতাই ২০১৪ সালের শেষটা ভালোভাবে করার। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের আগ পর্যন্ত এ বছর টেস্ট-ওয়ানডে-টিটোয়েন্টির তিন ফরম্যাট মিলিয়ে সাকুল্যে মোটে দুই জয় ছিল মুশফিকুর রহিমের দলে। সেটিও আফগানিস্তান ও নেপালের বিপক্ষে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঢাকা টেস্ট জয় তাই চলতি বছর আইসিসির পূর্ণ সদস্য কোনো দেশের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয়।শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে কাল দুপুর থেকে তিন ঘণ্টা অনুশীলন করে মুশফিকের দল। ঢাকা টেস্টে ইনিংসে ৮ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ইনিংসে সবচেয়ে ভালো বোলিংয়ের রেকর্ড গড়া তাইজুল ইসলামকে নিয়ে সংশয় ছিল। তবে জণ্ডিসের আশঙ্কা উড়িয়ে চিকিৎসকরা এরই মধ্যে সবুজ সংকেত দিয়ে দিয়েছেন তাঁকে। খুলনার একাদশে তাই তাইজুলের থাকাটা নিশ্চিত।অনিশ্চয়তা ছিল তামিম ইকবালকে নিয়েও। ডান হাতে বৃদ্ধাঙ্গুলে চোট পাওয়া ওপেনার কাল নেটে অনুশীলন করেননি ঠিকই। তবে অল্প দূরত্ব থেকে ছুড়ে মারা বলে নকিং করে স্বস্তি এনে দিয়েছেন টিম ম্যানেজমেন্টে। পরশু থেকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় টেস্টে তামিমের খেলাটাও তাই একরকম নিশ্চিত।খেলা নিশ্চিত হলেও ফর্মে ফেরার নিশ্চয়তা দেবেন কে! বিশেষত বাংলাদেশের দুই ওপেনারের। ঢাকা টেস্ট জয়ের পরও অস্বস্তির চোরাকাঁটা যে কিছু বিষয় নিয়ে, তার একটি দুই ওপেনারের কারোই রান না পাওয়া। তামিম (৫ ও ০) ও শামসুর (৮ ও ০) রহমান ঢাকায় চার ইনিংস মিলিয়ে রান করেছেন মোটে ১৩! দ্বিতীয় ইনিংসে তো শূন্য রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ১০১ রানের জয়ের লক্ষ্যটাও দুরূহ করে ফেলেছিল টপ অর্ডার। ওপেনার শামসুরের সেটি ভালোই জানা।কাল খুলনার মাঠে অনুশীলন শেষে ঢাকার ভুলগুলোর পুনরাবৃত্তি এড়ানোর প্রত্যয় ছিল তাঁর কণ্ঠে, ‘প্রথম টেস্ট তিন দিনে জিতলেও আমাদের কিছু ভুলক্রটি ছিল। সেগুলো ভুলে যেতে চাই। বিশেষ করে আমাদের ব্যাটসম্যান অনেকেই রান পাননি। আমরা এটা কাটিয়ে উঠতে চাই।’ ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলার ওপরও জোর দিয়েছেন তিনি, ‘আমরা আমাদের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে চাই। আর শুধু জয় নয়, ভালো খেলতে চাই আমরা।’খুলনায় জিতলে শুধু সিরিজ জয় নিশ্চিত হবে না বাংলাদেশের, আইসিসি বিশ্ব টেস্ট র‌্যাংকিংয়ে জিম্বাবুয়েকে টপকে ৯ নম্বরেও উঠে যাবে মুশফিকের দল। সেটিও যে দলের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে ভালোভাবে, দলের প্রতিনিধি হয়ে এসে শামসুর বলে গেলেন তা, ‘আইসিসি র‌্যাংকিংয়ের বিষয়টি আমাদের মাথায় থাকবে অবশ্যই।’

Advertisement