সিলেট বিভাগে শনিবার (২৫ এপ্রিল) একদিনেই সর্বোচ্চ ২২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে দুজন ও ঢাকায় পরীক্ষায় বাকি ২০ জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়।
Advertisement
ওসমানী মেডিকেল কলেজে শনিবারের পরীক্ষায় দুজন করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়।
তিনি বলেন, শনিবার ওসমানীর পিসিআর ল্যাবে মোট ১৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে দুজনের রিপোর্ট পজেটিভ আসে। ওই দুজনের একজনের বাড়ি হবিগঞ্জ ও আরেকজনের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলায়।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের আরও ২০ রোগীর করোনা পজেটিভ শনাক্ত হওয়ার কথা জানান জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলেছুর রহমান উজ্জ্বল। এসব ব্যক্তির নমুনা ঢাকায় পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এ নিয়ে হবিগঞ্জ জেলাতে মোট ২১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হলো।
Advertisement
হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান জানান, ঢাকায় পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটসহ জেলা প্রশাসনের চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন। এছাড়া হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের একজন চিকিৎসক, একজন সেবিকা (নার্স) ও ৯ জন স্বাস্থ্যকর্মীও রয়েছেন। এ নিয়ে হবিগঞ্জে মোট ৪৭ জন করোনাভাইস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলো। আর পুরো বিভাগে এই সংখ্যা ৭৫।
এদিকে, নানা নাটকীয়তার পর ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়া করোনাভাইরাস আক্রান্ত সেই প্রসূতি নারীর সন্ধান মিলেছে।
শনিবার বিকেলে মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানাপুলিশ খাদিমনগর ইউনিয়নের কাকুয়ার পাড়ে ওই নারীর সন্ধান পায়। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, শুক্রবার রাত থেকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে শনিবার বিকেলের কাকুয়ার পাড়ে ওই নারীর সন্ধান পাই। পরে আক্রান্ত নারীর বাবা-মা তাকে শামসুদ্দিন হাসপাতালে নিয়ে গেছেন।
ওসি বলেন, ওই নারীর বাবা খদিমনগরের লাখাউড়ায় বসবাস করছেন। তিনি সিলেটের আদালতের কর্মচারী। কাকুয়ার পাড়ে ওই নারীর নানাবাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
Advertisement
জানা গেছে, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে গত বুধবার এক নবজাতকের জন্ম দেন ওই নারী। বৃহস্পতিবার নবজাতকের মৃত্যু হয়।
ওসমানী হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের গাইনি বিভাগে একই নামের দুজন প্রসূতি ভর্তি হন। দুজনেরই সন্তান প্রসবের পর মারা যায়। এর মধ্যে এক নারীকে বৃহস্পতিবার ছাড়পত্র দেয়া হয়। আর করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা নেয়া আরেকজন হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডেই আইসোলেশনে ছিলেন। তবে তিনি সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) কোনো এক সময়ে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান।
বৃহস্পতিবার রাতে নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজেটিভ আসায় খোঁজ পড়ে তার। তাকে না পেয়ে শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। খবর দেয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নের রঙ্গিটিলা এলাকার এক নারীকে ধরে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে পরীক্ষা করে জানা যায়, পালিয়ে যাওয়া ওই নারীর বদলে ছাড়পত্র নিয়ে যাওয়া নারীকে ধরে আনা হয়েছে।
পরে শুক্রবার বিকেলে ওই নারীকে বাসায় পাঠিয়ে দেন শামসুদ্দিন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এরপর আবার আসল নারীর খোঁজে নামে পুলিশ। শনিবার বিকেলে তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়।
ছামির মাহমুদ/এমএসএইচ