সিঙ্গাপুরে অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে যেন মড়ক লেগেছে করোনার। প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছেন শত শত মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায়ও দেশটিতে অন্তত ৬১১ জন অভিবাসী শ্রমিকের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
Advertisement
শনিবার সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার দেশটিতে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন মোট ৬১৮ জন, যা গত ২৯ মার্চের পর থেকে সর্বনিম্ন। এ নিয়ে সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৬৯৩ জন।
নতুন রোগীদের মধ্যে সাতজন সিঙ্গাপুরের নাগরিক বা স্থায়ী অধিবাসী। বাকি সবাই বিভিন্ন ডরমিটরিতে বসবাসকারী অভিবাসী।
গত শুক্রবার দেশটিতে ৮৯৭ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল। এর আগের টানা চারদিন সেখানে এক হাজারের বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যেও বেশিরভাগই ডরমিটরিতে বসবাসকারী অভিবাসী।
Advertisement
সিঙ্গাপুরে অন্তত ৩ লাখ ২৩ হাজার অভিবাসী শ্রমিক কাজ করেন। তাদের মধ্যে অন্তত ৯ হাজার ৯২৯ জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। এদের মধ্যে আবার প্রায় অর্ধেকই বাংলাদেশি।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় শুরুর দিকে সব দেশের কাছেই আদর্শ হয়ে উঠেছিল সিঙ্গাপুর। চমৎকার ব্যবস্থাপনায় মহামারির প্রথম ধাক্কা বেশ সফলভাবেই প্রতিরোধ করেছে তারা। তবে গত একমাসে অনেকটাই ভেঙে পড়েছে সেই প্রতিরোধের দেয়াল। আর এতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়েছেন অভিবাসীরা।
প্রায় ৬০ লাখ জনসংখ্যার ছোট্ট নগররাষ্ট্রটিতে শ্রমশক্তির এক-তৃতীয়াংশই অভিবাসী। এর মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ এশীয় দেশগুলোর কর্মীরা নিবন্ধিত ৪৩টি ডরমিটরিতে বসবাস করেন। সেখানে একেকটি রুমে গাদাগাদি করে থাকেন প্রায় ২০ জন করে। তাদের সবাই একই বাথরুম ও রান্নাঘর ব্যবহার করেন।
এককথায়, এ ধরনের জায়গায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অসম্ভব। এ কারণে সেসব জায়গায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিও অত্যন্ত বেশি। ইতোমধ্যেই সিঙ্গাপুরের নয়টি বেসরকারি ডরমিটরিতে ছড়িয়ে পড়েছে নভেল করোনাভাইরাস।
Advertisement
দেশটিতে করোনা সংক্রমণের সবচেয়ে বড় কেন্দ্র হিসেবে পংগলের এস১১ ডরমিটরিকে চিহ্নিত করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার পর্যন্ত এই ডরমিটরির প্রায় ২ হাজার ২৬৩ জন অধিবাসী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, যা গোটা দেশে আক্রান্তের সংখ্যার প্রায় এক-পঞ্চমাংশ। এর জন্য কর্তৃপক্ষের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা না নেয়াকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে ৯৫২ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন। আর মারা গেছেন ১২ জন।
সূত্র: দ্য স্ট্রেইট টাইমস
কেএএ/এমকেএইচ