ম্যাচ ফিক্সিং করে পাকিস্তান ক্রিকেটকে কলুষিত করা প্রথম ক্রিকেটার সেলিম মালিক। ফিক্সিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর, ২০০০ সালে সেলিম মালিককে আজীবনের জন্য ক্রিকেটীয় কর্মকাণ্ড থেকে নিষিদ্ধ করেছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।
Advertisement
তবে আদালতের রায়ে ২০০৮ সালে উঠে গেছে মালিকের আজীবন নিষেধাজ্ঞা। সেদিন থেকেই তিনি মুক্ত যেকোন ক্রিকেটীয় কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়ার জন্য। তবু গত ১২ বছরে পিসিবির কাছে বারবার আবেদন করেও কোন ইতিবাচক সাড়া পাননি মালিক। তাকে দেয়া হয়নি ক্রিকেটের কোন দায়িত্ব।
গত কয়েকদিন ধরেই এ বিষয়ে সরব হয়েছেন মালিক। জানিয়েছেন পুনরায় পাকিস্তান ক্রিকেটে অবদান রাখার ইচ্ছের কথা। কিন্তু বোর্ডের অবস্থান অনড়। ফিক্সিংয়ের বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে জবাবদিহিতা না দিলে কোনভাবেই দায়িত্ব পাবেন না মালিক।
বিশেষ করে ২০১০ সালে মোহাম্মদ আমির, মোহাম্মদ আসিফ ও সালমান বাটদের ফিক্সিং স্ক্যান্ডালের পর ২০১৩ সালে একটি কমিশন গঠনের মাধ্যমে, মালিকের কাছে কিছু ডকুমেন্ট পাঠিয়েছিল পিসিবি। সেখানে তাকে বলা হয়েছিল কিছু প্রশ্নের উত্তর সরাসরি দেয়ার জন্য। কিন্তু গত ১০ বছরেও তা করেননি মালিক।
Advertisement
আজীবন নিষিদ্ধ হওয়ার পর যুক্তরাজ্যে কিছু সন্দেহভাজন ব্যক্তির সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ করেছিলেন মালিক। মূলত তখনকার ঘটনা নিয়েই বিস্তারিত জানতে চেয়েছিল পিসিবি। কিন্তু গত ৭ বছরেও তা জানাননি মালিক। ফলে নিজেদের প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার আগে মালিককে কোন দায়িত্বের জন্য বিবেচনা করতে রাজি নয় ক্রিকেট বোর্ড।
পিসিবি আইন বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা তাফাজ্জুল রিজভি এ বিষয়ে বলেন, ‘সেলিম মালিকের সততা নিয়ে সবসময়ই গুরুতর প্রশ্ন ছিল। এ বিষয়ে স্বচ্ছতার জন্য তাকে একটা ট্রান্সক্রিপট দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এরপর কয়েকবার স্মরণ করিয়ে দেয়ার পরও তিনি এর জবাব দেননি।’
মালিকের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ ছিল তিনি ১৯৯৪-৯৫ মৌসুমের করাচি টেস্টে ঘুষ দেয়ার মাধ্যমে ম্যাচের ফল নিজেদের পক্ষে এনেছিলেন। ১৯৯৮ থেকে প্রায় ১৩ মাস ধরে চলা তদন্তের পর ২০০০ সালে ১০ লাখ রুপি জরিমানার পাশাপাশি আজীবন নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয় মালিককে।
আদালতের রায়ে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যায় ২০০৮ সালে। পরে তিনি ২০১০-১১ মৌসুমের জন্য বোর্ডের ক্রিকেট পরামর্শক পদে আবেদন করেন। কিন্তু নিজের কর্মকাণ্ডের ব্যাখ্যা দেননি বিধায় এখনও পর্যন্ত বোর্ডের কোন কিছুতে সম্পৃক্ত হতে পারেননি তিনি।
Advertisement
সম্প্রতি দেশটির সাবেক অধিনায়ক ইনজামাম উল হক ব্যাট ধরেছেন মালিকের পক্ষে। তার মতে ভারতের ফিক্সিংয়ের কলঙ্ক থাকা আজহারউদ্দিন বড় দায়িত্ব পেলে, সেলিম মালিককেও ব্যবহার করা উচিৎ পাকিস্তানের। কেননা একটা সময় দেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটারই ছিলেন মালিক।
এদিকে ইনজামামের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মালিক তুলে ধরেছেন আমির-আসিফদের উদাহরণ। বর্তমান সময়ের ফিক্সিং করা ক্রিকেটাররা যদি পুনরায় ক্রিকেট খেলতে পারে, তাহলে তাকেও এই অনুমতি দেয়া উচিৎ বলে মনে করেন পাকিস্তানের হয়ে প্রায় ১৭ বছর খেলা এই ক্রিকেটার।
এসএএস/এমএস