হাসপাতাল ও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বাইরে করোনা রোগীদের জন্য ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন প্রয়োগ করার ওপর সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রাশাসন বিভাগ। তারা বলছে, এর কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে। তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ওষুধকে ‘গেম চেঞ্জার’ বলে আসছেন।
Advertisement
করোনা রোগীদের ম্যালেরিয়ার এই ওষুধ সেবনের কারণে হৃৎস্পন্দন ও হৃদরোগের বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করায় দেশটির কেন্দ্রীয় এই স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এমন সতর্কতা জারি করলো। এছাড়া হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সেবনের কারণে কোভিড-১৯ রোগীরা আরোগ্য হওয়ার বদলে আরও বেশি মৃত্যুঝুঁকিতে পড়ছে, গবেষণায় এমনটাও দেখা গেছে।
আজ শুক্রবার এ নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়ে মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন বিভাগ। তাতে বলা হচ্ছে, ‘কোভিড-১৯ রোগীদের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন বা ক্লোরোকুইন প্রয়োগের কারণে রোগীদের অস্বাভাবিক হৃৎস্পন্দনসহ হৃদরোগের মারাত্মক কিছু উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। এ সংক্রান্ত রিপোর্ট আমাদের হাতে এসেছে। তাই এটির ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘হাসপাতারের বাইরে এই ওষুধের ব্যবহার যে ব্যাপকহারে বাড়তে শুরু করেছে সে সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি। তাই আমরা স্বাস্থ্যসেবা খাতের পেশাজীবী ও রোগীদের মনে করিয়ে দিতে চাই করোনার চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন এবং ক্লোরোকুইন সেবন শরীরের জন্য বিপদজনক।’
Advertisement
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহার করে ফল পাওয়া যাবে বলে বিশ্বজুড়ে যে আলোচনা তৈরি হয়েছে তা এর আগে নাকচ করে দেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক। তারা বলছেন, কোভিড-১৯ রোগে এই ওষুধের কোনো কার্যকরীতা নেই, উল্টো এটা সেবনে মৃত্যুর হার বেশি।
বৈজ্ঞানিক উপায়ে পরিচালিত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে করোনা থেকে আরোগ্য লাভের ওষুধ কিংবা এর প্রতিষেধক (ভ্যাকসিন) এখনো আবিষ্কার হয়নি বিশ্বে। তাই করোনাভাইরাসের চিকিৎসা, বিশেষ করে ড্রাগ থেরাপি নিয়ে বিতর্ক চলছে। তবে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন কাজ করছে বলে এর আগে অনেক দেশ জানায়। তালিকায় আছে চীন ও ফ্রান্স।
ফ্রান্স থেকে প্রকাশিত একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে করোনা প্রতিরোধে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ইতিবাচক কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়েছিল। এছাড়া চীন থেকেও এই দুই ওষুধের কার্যকারিতার কথা জানানো হয়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ১১টি হাসপাতালেও এর ব্যবহার শুরু হয়েছে। তবে এখন দেখা যাচ্ছে, এতে ঝুঁকি বেশি।
এসএ
Advertisement