করোনাভাইাসের কারণে চরম খাদ্য সঙ্কট তৈরি হওয়ার শঙ্কা দেখা দিলেও ইরি মৌসুমের ধান যদি সঠিকভাবে কৃষক ঘরে তুলতে পারে, তাহলে সেই সঙ্কট মোকাবেলা করা সহজ হবে। যে কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষকের ধান যেন সঠিকভাবে ঘরে তোলে সে নির্দেশ দিয়েছেন প্রশাসন এবং তার দলীয় নেতা-কর্মীদের।
Advertisement
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পরই সারা দেশে কৃষকের ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য অভাবনীয় সাড়া দিয়েছে প্রশাসন, আওয়ামীলীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগর নেতাকর্মীরা। সারা দেশের মত প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশ পালনে মাঠে নেমেছে ফেনীর দাগনভূঁইয়া উপজেলার ১ নং সিন্দুরপুর ইউনিয়নের ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা। জনপ্রতিনিধি হিসেবে পুরো বিষয়টা তদারকি করলেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর নবী।
আজ শুক্রবার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের চন্দ্রপুর গ্রামে দুই কৃষকের প্রায় ১০০ শতাংশ জমির ধান কেটে দিয়েছে ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের নেতাকর্মীরা।
সিন্দুরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর নবী জাগো নিউজকে জানান, তার ইউনিয়নে প্রায় ১৫২০ হেক্টর জমিতে এবার বোরো মৌসুমে ধান চাষ করা হয়েছে। ফলনও হয়েছে ভালো। তবে করোনাভাইরাসের কারণে সারাদেশ লকডাউন। ফেনীর দাগনভূঁইয়া উপজেলাও সরকারের নির্দেশ মেনে লকডাউন পালন করছে। যাতে করে করোনাভাইরাস ছড়াতে না পারে।
Advertisement
কিন্তু লকডাউনে থাকার কারণে কৃষক জমির ধান কেটে ঘরে তোলার মত শ্রমিক পাচ্ছেন না। প্রতি বছর এই সময়টাতে উত্তরাঞ্চলের প্রচুর শ্রমিক কাজ করতে আসতো। কিন্তু এবার আর তাদেরকে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ক্ষেত্রের ধান ক্ষেতেই ঝরে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ কারণেই আওয়ামীলীগের অঙ্গসংগঠন ইউনিয়ন ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ কৃষকের ক্ষেতের ধান কেটে দেয়ার উদ্যোগ নেয়।
ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি জাকের হোসেন জানান, প্রায় ২৫জন নেতা-কর্মী সারাদিন দুই কৃষকের প্রায় ১০০ শতাংশ জমির ধান কেটে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন।
১ নং সিন্দুরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি নুর নবী বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়নে শ্রমিকের অভাবে যেন কোনো কৃষকের ধান জমিতে পড়ে না থাকে, সে কারণেই উদ্যোগ নিয়েছি ধান কেটে দেয়ার। আজ প্রায় ১০০ শতাংশ জমির ধান কেটে ইউনিয়ন ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের নেতাকর্মীরা কৃষকের বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে। আমরা কৃষকে ধান মাড়াই করে তাদের ঘরেও তুলে দেবো। পুরো ইউনিয়নে যতদিন কৃষকের ধান মাঠে থাকবে, ততদিন ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ তৎপর থাকবে। কৃষকের ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে ধান মাড়াইও করে দিয়ে আসবে।’
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ এই দায়িত্ব পালন করছে বলে জানান চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশব্যাপি আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন যেন কৃষকের ধান মাঠে পড়ে না থাকে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে ফেনী জেলা আওয়ামীলীগের সম্মানিত সেক্রেটারি এবং সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর তত্ববধানে আমরা কৃষকের ধান কেটে বাড়িতে তুলে, মাড়াই করে দিচ্ছি। এ ধরনের দুর্যোগে সবসময়ই ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা কৃষকের পাশে থাকে। এভাবে যদি প্রত্যেকে একে অন্যের সমস্যায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে পারি, তাহলে দেশ আরও অনেক এগিয়ে যাবে।’
Advertisement
ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি জাকের হোসেন বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে পুরো এলাকা লকডাউন। শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি এই পরিস্থিতিতে অনেক অবস্থাসম্পন্ন কৃষকের হাতে টাকাও নেই যে শ্রমিক ভাড়া করে ধান কেটে ঘরে তুলবে। এ কারণে মাননীয় চেয়ারম্যান নুর নবী সাহেবের নির্দেশে আমরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের নেতাকর্মীরা আজ (শুক্রবার) সারাদিন দুইজন কৃষকের ধান কেটে বাড়িতে তুলে দিয়ে এসেছি। এভাবে আমরা ইউনিয়নজুড়ে সব অসহায় কৃষকের পাশে দাঁড়াতে চাই।’
আইএইচএস/