প্রবাসী বাঙালিদের সকলের দৃঢ় প্রচেষ্টায় শিশু রাজন হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত কামরুল ইসলামকে ফেরানো সহজ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার কামরুল আহসান। বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় কামরুলকে সিলেটে নিয়ে আসে পুলিশ। এরপর সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।জনাকীর্ণ এক সংবাদ সম্মেলনের পর কামরুলকে ফিরিয়ে আনতে সৌদি আরব যাওয়া সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ রহমতউলাহ সৌদি পুলিশের বরাত দিয়ে বলেন, প্রবাসী বাঙালিদের চাপের কারণেই কামরুলকে ফেরানো সহজ হয়েছে।‘হত্যাকাণ্ডের পর কামরুলকে কারা সৌদি আরবে পালাতে সহয়তা করেছে আর কীভাবে কামরুল সৌদি আরবে গেলেন সে কথা আমরা কামরুলের মুখ থেকে শুনতে চাই’ রাজনের বাবার এই দাবি প্রসঙ্গে জাগো নিউজের পক্ষ থেকে পুলিশ কমিশনার কামরুল আহসানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, রাজনের বাবা কী বলেছেন সেটা আমরা জানি না। যেহেতু বিষয়টি বিচারাধীন তাই এ বিষয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না।পুলিশ কমিশনার মো. কামরুল আহসান বলেন, শিশু রাজন হত্যাকাণ্ড একটি মর্মস্পর্শী ঘটনা। এ হত্যাকাণ্ডের পর এসএমপি পুলিশ সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলার ১০ জন আসামিকে আটক করে। পলাতক তিনজনের মধ্যে বৃহস্পতিবার প্রধান আসামিকে ফিরিয়ে আনতে পারায় আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ।দণ্ডবিধির-১৬৪ ধারায় কামরুলের জবানবন্দী গ্রহণ বা রিমান্ডে নেয়া হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে কামরুল আহসান বলেন, আমরা যথেষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালতে চার্জশিট দিয়েছি এবং এ মামলার আটজনের স্বীকারোক্তিতেও কামরুলের নাম এসেছে। আর ওই চার্জশিটের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষের দিকে। তাই মামলাটি বিচারাধীন থাকায় আমরা শুধু কামরুলকে আদালতে সোর্পদ করবো।রহমতউলাহ বলেন, সৌদি পুলিশের ইন্টারপোল শাখার প্রধান মেজর আল জাজিবা বলেছেন, সৌদিতে বসবাসকারী ১৬ লাখ বাঙালির দাবি কামরুলকে যেন দেশে ফিরিয়ে দেয়া হয়। তাই তারা কামরুলকে ফিরিয়ে দিচ্ছেন।সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ রহমতউলাহসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তা ১১ অক্টোবর কামরুলকে ফিরিয়ে আনতে সৌদি আরব যান। বৃহস্পতিবার বিকেলে তারা কামরুলকে নিয়ে ঢাকায় পৌঁছেন। এরপর সিলেটের উদ্দেশে রওনা দেন।৮ জুলাই শিশু সামিউল আলম রাজনকে হত্যার পর সৌদি আরব পালিয়ে গিয়েছিল কামরুল ইসলাম। সংবাদ সম্মলনে পুলিশ কমিশনার কামরুল আহসান বলেন, এই হত্যা মামলাটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা। পুলিশ দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলার চার্জশীট দিয়েছে। বিচার কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কামরুলকে আদালতে সোর্পদ করা হবে বলেও জানান কমিশনার।এই মামলায় পলাতক থাকা অপর দুই আসামিকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি। রাজন হত্যা মামলায় ১৩ আসামির মধ্যে কামরুলসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রোকন উদ্দিন, উপকমিশনার রেজাউল করিম উপস্থিত ছিলেন।ছামির মাহমুদ/বিএ
Advertisement