এ এক অন্যরকম রমজান। মসজিদে খতম তারাবিহবিহীন যে রমজান কল্পনাও করেনি কেউ। ঘরে ঘরে বন্দি মানুষ। অথচ হাদিসের ঘোষণাটি হলো এমন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
Advertisement
‘রহমতের মাস রমজানে জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। শয়তানে বন্দি করে রাখা হয়।’
হাদিসের এ ঘোষণার মাসে ভিন্ন এক পরিবেশে মুসলিম উম্মাহর দরজায় কড়া নাড়ছে রহমতের মাস রমজান। রমজানের আগেই মহামারি করোনা মুক্তিতে মহান আল্লাহর রহমত কামনা করছে মুমিন মুসলমান।
কারণ বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহ আজ ঘরে ঘরে বন্দী। সারা দুনিয়া আল্লাহর এক ছাদের নিচে উন্মুক্ত হলেও মসজিদের দরজা-জানালাই আজ বন্ধ। কে জনতো বিশ্বব্যাপী সব মানুষ এ পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে।
Advertisement
সারা দুনিয়ার দুএকটি দেশ বা অঞ্চল ব্যতিত কোনো মসজিদে হবে তারাবিহ, ইফতার ও ইতেকাফ। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে হাফেজে কুরআনদের সেই তেলাওয়াতও হবে এবার। শর্তসাপেক্ষে সর্বাধিক ১২ মুসল্লি নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে রমজানের বিশেষ ইবাদত তারাবিহ।
ঘরে ঘরে বন্দী মানুষ যে যেভাবে পারছে রমজানের ইবাদতের প্রস্তুতি নিচ্ছে। মুমিন মুসলমানের কাছে সুখ-দুঃখ একই রকম। সে কারণেই মুমিন সর্বাবস্থায় আল্লাহর প্রশংসায় নিয়োজিত থাকে।
বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণেই পুরো দুনিয়া জুড়ে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। আর এতেও হতাশ নয় মুমিন। বরং এ পরিস্থিতিতেও রমজানের প্রস্তুতি নিচ্ছে ঈমানদার মুসলমান।
ঘরে ঘরে পরিবারের সদস্যরা আদায় করবে পাঞ্জেগানাসহ তারাবির জামাআত। ঘরোয়া পরিবেশেই বসবে আমল ও কুরআন শিক্ষার আসর। পারিবারিকভাবেই গ্রহণ করবে ইফতার ও সাহরি।
Advertisement
অন্যান্য রমজানের বড়দের উপস্থিতর সঙ্গে ছোট ছোট কচিকাচা শিশুরাও অংশগ্রহণ করতো মসজিদের ইফতার, তারাবিহ ও ওয়াক্তিয়া নামাজে। এবার সে প্রশিক্ষণ হবে নিজ নিজ ঘরে। এ মহান আল্লাহর ইচ্ছা। তিনি তাই চান বান্দার জন্য যা কল্যাণকর।
রহমতের রমজানের এবারের ঘরোয়া পরিবেশের ইবাদত-বন্দেগি মুমিন-মুসলমানকে ভুলিয়ে দেবে মসজিদে আসার বেদনা। কেননা মুমিন কখনো হতাশ হয় না। মহান আল্লাহই সে ঘোষণা দিয়ে বলেন-‘হে আমার বান্দারা! তোমরা যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে নিরাশ হয়ো না।’ (সুরা যুমার, আয়াত : ৫৩)
সুতরাং মহামারি করোনা মানুষের প্রতি জুলুমকে অনেকাংশেই কমিয়ে দিয়েছে। কমিয়ে দিয়েছে হতাশা। দিয়েছে রহমতের হাতছানি। যে রহমত থেকে নিরাশ হতে মুমিনকে নসিহত করেছেন স্বয়ং আল্লাহ।
সুতরাং ঘরে আবদ্ধ এ রমজানে হতাশা নয়, বরং মনোবল শক্ত করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ইবাদত-বন্দেগি, তারাবিহ-তাহাজ্জুদ, জিকির-আজকার, তাওবা-ইসতেগফার ও বেশি বেশি দোয়া-দরূদে কাটিয়ে দেই রহমতর বার্তাবাহী মাস রমজান।
হতে পারে মহান আল্লাহ মুমিন মুসলমানের এ ইবাদত-বন্দেগিতে খুশী হয়ে দান করবেন মহামারি করোনামুক্ত পৃথিবী। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ঘরে বসেই রমজানের রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমকেএইচ