নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় নিজের এবং পরিবারের কথা চিন্তা না করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনাভারইরাসের বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন মো. মোতালিব মিয়া নামে এক যুবক। তিনি সরকার ও স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী মানুষকে চলার জন্য আহ্বান করছেন। অহেতুক রাস্তায় বের কতে নিষেধ করছেন। সবাইকে ঘরে থাকার অনুরোধ জানিয়ে হ্যান্ড মাইক দিয়ে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে এবং অলিগলিতে ছুটে বেড়াচ্ছেন।
Advertisement
গত এক মাস ধরে একটি হ্যান্ড মাইক, হাতে একটি লাঠি, একটি বাঁশি, মুখে মাস্ক পড়ে মানুষকে সচেতন করার জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছেন মোতালিব মিয়া। তিনি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার হরিহরপাড়া আমতলা এলাকার সাধারণ একজন ব্যবসায়ী। নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে মানুষকে করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদে রাখতে মোতালিব মিয়া এই সচেতনতামূলক কাজ করে যাচ্ছেন।
মোতালিবের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি তিন মেয়ে, দুই ছেলে ও স্ত্রী নিয়ে হরিহরপাড়া আমতলা এলাকায় বসবাস করেন। আমতলায় একটি ছোট খাটো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে সংসার চালাতেন। বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত হু হু করে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জকে করোনাভাইরাসের হটস্পট ঘোষণা করা হয়েছে। এতে নারায়ণগঞ্জবাসীর মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আর তখন থেকেই মোতালিব চিন্তা করেন জনসমাগম দূর করতে মানুষকে ঘরমুখী করতে হবে। যে কারণে তিনি নিজের এবং পরিবারের কথা চিন্তা না করে নিজ এলাকার মানুষকে সচেতন করতে ঘর থেকে বের হয়েছেন।
মোতালিব মিয়া বলেন, প্রতিদিন সকাল বেলা যখন ঘুম ভেঙে যায় তখন চিন্তা করি করোনাভাইরাসকে ভয় না পেয়ে এলাকার লোকজন রাস্তায় বের হয়ে যাচ্ছে মনে হয়। আর আমাদের এলাকার লোকজন বিপৎগামী হচ্ছেন। তাদেরকে বাঁচাতে হবে। এলাকার জনগনের কথা চিন্তায় নিজের জীবনের কথা চিন্তা না করে সকাল সকাল ঘর থেকে বের হয়ে যাই মানুষকে একটু সচেতন করতে। আমার একটু পরিশ্রমে যদি আমার এলাকার হাজার হাজার লোক একটু সচেতন হয় তাহলে তারা করোনা থেকে মুক্তি পাবে। এতে আমার পরিশ্রম সার্থক হবে।
Advertisement
নিজের পরিবারের চিন্তা বাদ দিয়ে কেন সাধারণ জণগনকে সচেতন করতে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন- এমন প্রশ্ন করলে মোতালিব বলেন, আমার একটু চেষ্টায় যদি শত শত লোকজন করোনা থেকে মুক্তি পায় তাহলে আমি দুনিয়াতে কিছু না পেলেও পরকালে তো কিছু না কিছু পাবো। আর সংসার আল্লাহ চালাবেন। আর সরকার যদি আমার দিকে একটু সু-নজর দেয় তাই হবে।
শাহাদাত হোসেন/আরএআর/জেআইএম