করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কৃষক ও ক্ষেতমজুরের দুর্ভোগ লাঘবে ১০ দফা দাবি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ কৃষক সমিতি ও বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি।
Advertisement
বুধবার (২২ এপ্রিল) ওই স্মারকলিপি দেয়া হয় বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন ও ক্ষেতমজুর সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রেজা স্বাক্ষরিত ওই স্মারকলিপির অনুলিপি অর্থ, খাদ্য, কৃষি ও বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে।
স্মারকলিপিতে উল্লেখিত ১০ দফায় বলা হয়েছে, বোরো ধান কাটা, মাড়াই, নিরাপদে ঘরে তোলা, বাজারজাতসহ সার্বিক কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে হবে। ক্ষেতমজুরদের ধান কাটার জন্য ফসলের এলাকায় বিনা খরচে যাতায়াত, স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা ও থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্তসহ ১০ লাখ টাকার স্বাস্থ্যবীমা নিশ্চিত করতে হবে। ক্ষেতমজুরসহ গ্রামীণ মজুর পরিবারগুলোকে সেনা সহায়তায় চিহ্নিত করে তাদেরকে রেশন কার্ডের মাধ্যমে ৩ মাস বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করতে হবে। সকল ঋণ ও কিস্তি (মহাজনি, এনজিও, ব্যাংক ঋণ) মওকুফ করতে হবে। প্রতিটি ইউনিয়নে শস্য ক্রয়কেন্দ্র খুলে চলতি বোরো মৌসুমে ২০ লাখ টন ধান সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ও ১০ লাখ টন চাল চাতাল মালিকের মাধ্যমে সরকার নির্ধারিত দামে ক্রয় করতে হবে।
আরও বলা হয়েছে, ক্ষুদ্র ও মাঝারী সবজি চাষি, পোল্ট্রি, ডেইরি ও গবাদিপশু খামারিকে রক্ষায় জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা সরাসরি সহায়তা প্রদান ও দুই শতাংশ সরল সুদে ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। সবজি জাতীয় কৃষিপণ্য সরকারি উদ্যোগে বাজারজাত করার ব্যবস্থা করতে হবে। ত্রাণ-সাহায্য বিতরণে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দলীয়করণ বন্ধ এবং গ্রামাঞ্চলে কর্মরত সকল ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, পরিবহণ শ্রমিক ও ক্ষেতমজুরদের সুরক্ষায় মাস্ক, পিপিই ইত্যাদির ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পর্যায়ক্রমে ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র, খাদ্যগুদাম ও সবজিচাষ অধ্যুষিত অঞ্চলে হিমাগার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
Advertisement
দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে স্মারকলিপিতে বলা হয়, দেশের বর্তমান সংকটকালে অর্থনীতিতে যে ধস নেমেছে, প্রধানত কৃষি খাতকে রক্ষা করা ও তার পুনরুজ্জীবনের মধ্য দিয়েই তা থেকে উদ্ধার পাওয়া সম্ভব হতে পারে। তাই কৃষিকে আগামী দিনে দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করতে হবে। জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের জোগান দিতে ও অর্থনীতিতে গতি সৃষ্টি করতে কৃষি খাতকে প্রধান অবলম্বন করতে হবে। সেক্ষেত্রে দেশের মেহনতি কৃষক ও ক্ষেতমজুরদের মূল অবদান রাখতে হবে। তাই, বর্তমানে কৃষি ও কৃষি-সংশ্লিষ্ট কৃষক-ক্ষেতমজুরদের স্বার্থ রক্ষার প্রতি নজর দেয়া জরুরি।
এইচএস/এফআর/পিআর