এন-৯৫ মাস্ক কেলেঙ্কারিতে সরবরাহকারী ও গ্রহণকারীর যোগসাজশ আছে কি না, তা তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এই আহ্বান জানান। উপযুক্ত প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের জবাবদিহির আওতায় আনারও দাবি জানান তিনি।
Advertisement
যদিও ইতোমধ্যে এন-৯৫ মাস্ক ব্রান্ডের মোড়কে সাধারণ ও নিম্নমানের মাস্ক সরবরাহের অভিযোগ তদন্তে রোববার কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। মাস্ক সরবরাহকারী সিএমএসডিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
ইফতেখারুজ্জামান তিনি বলেন, এন-৯৫ মাস্ক সরবারহ করাকে কেন্দ্র করে আলোচিত ঘটনাটি এখন যেভাবে ব্যাখ্যা করার কথা বলা হচ্ছে, যে প্যাকেজিংয়ে ভুল। পর্যাপ্ত পরিমাণে পর্যবেক্ষণ করে সরবরাহ করা হয়নি। এটা (হিউম্যান অ্যারোর) মানুষের ভুলেও হতে পারে। কিন্তু এমন একটা দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি সরবারহকে কেন্দ্র করে এমন একটা ভুলকে হিউম্যান অ্যারোর হিসেবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। বাস্তবে এখানে কয়েকটা বিষয় ঘটার ঝুঁকি রয়েছে, দ্রুত সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য, অতি প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরকারকে অনেক সময় দ্রুত করতে হয়। তার অর্থ এই নয়, এখানে অনিয়ম ঘটবে বা অনিয়মের সুযোগ করে দেয়া হবে। যার ফলে একদিকে ক্রয় নীতি লঙ্ঘন হয়েছে কি না, সেটা দেখতে হবে। অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় হয়েছে কি না, সেটাও দেখতে হবে। তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, ব্যাপকসংখ্যক স্বাস্থ্যকর্মীর প্রত্যক্ষভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্ট করা হয়েছে, পাশাপাশি দেশের অগণিত সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ঝুঁকির সৃষ্টি করা হয়েছে।
'এই বিষয়টা পর্যাপ্ত তদন্তের বিষয়। যেহেতু সরবরাহকারী ও গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান শুরু থেকেই ঘটনাটি চাপা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাই সরবরাহকারী ও গ্রহণকারী যোগসাজশে এটি ঘটেছে কি না, সেটিও তদন্তের বিষয়। যদি উভয়পক্ষ বা একপক্ষের জালিয়াতির কারণে এ ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে উপযুক্ত প্রমাণ সাপেক্ষে তাকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।'
Advertisement
তিনি বলেন, আমি বিষয়টাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি এ কারণে, এমন একটা জাতীয় দুর্যোগকালে আমরা সবসময় বলে আসছি যে, সুযোগটা সৃষ্টি হয় মানুষের মানবিক গুণাবলি বিকাশের পাশাপাশি পাশবিক গুণাবলিও বিকশিত হয়। স্থানীয় পর্যায়ে আমরা ত্রাণ বিতরণে মধ্যে কম-বেশি দুর্নীতির চিত্র দেখতে পাচ্ছি। গণমাধ্যমে এসব বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। করোনার এর প্রভাব থেকে কাটিয়ে ওঠার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে রাষ্ট্রীয় খাদ্যে প্রচুর ক্রয় এবং সরাবরাহ ঘটবে। সেখানে এ ধরনের ঘটনা যদি বিচারহীনতা উপভোগ করার সুযোগ করে দেয়া হয়, তাহলে আমি যে বিষয়ে শঙ্কিত হচ্ছি, এটা হবে হিমশৈলের চূড়া মাত্র। এ ধরনের আরও অনেক ঘটনা ঘটছে কিংবা ভবিষ্যতেও ঘটবে। কাজেই এই ঘটনার অনতিবিলম্বে তদন্তের দরকার আছে। সুষ্ঠু ও সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে ব্যক্তির অবস্থানের ঊর্ধ্বে থেকে জবাবদিহির আওতায় আনা অপরিহার্য।
এফএইচ/জেডএ/জেআইএম