মরার ওপর খাঁড়ার ঘা-এই প্রবাদটি এখন খেটে যাচ্ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ক্ষেত্রে। করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের গবেষকরা এক গবেষণায় দেখেছেন, যেসব ব্যক্তিরা আগে থেকেই অসুস্থ তাদের ওপর জেঁকে বসে কোভিড-১৯। তারা বলছেন, যারা আগে থেকেই বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগ ভুগছেন তাদের শরীরে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত বেঁচে থাকে করোনা।
Advertisement
চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশের একটি হাসপাতালের গবেষকদের এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন মঙ্গলবার প্রকাশ হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গবেষকরা বলছেন, কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তিদের ফুসফুস ও মলে থেকে যেতে পারে করোনা। এবং যারা যতবেশি অসুস্থ তাদের শরীরে ততদীর্ঘ সময় থেকে যায় এই ভাইরাস।
গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব রোগীরা প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে ভুগেছেন করোনায়, তাদের এই সময়ের প্রায় অর্ধেকেরও কম সময়ে প্রস্রাবে এই ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে প্রথমদিকে তাদের রক্তে এই ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে খুবই কম।
Advertisement
প্রভাবশালী চিকিৎসা সাময়িকী ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়েছে। তবে করোনাভাইরাস নিয়ে এর আগে যতগুলো গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে, এটি তাদের থেকে ভিন্ন ধরনের।
জানুয়ারি থেকে মার্চ-এই তিন মাসে হাসপাতালের ৯৬ জন কোভিড-১৯ রোগীদের ওপর পরীক্ষা চালান গবেষকরা। তারা এসব রোগীর নাক, গলা, শ্বাসযন্ত্রের গভীর (যেমন-ফুসফুস), রক্ত, মল ও প্রস্রাবের নমুনা সংগ্রহ করেন। এভাবে তারা দেখতে চেয়েছেন এই ভাইরাস রোগীদের শরীরে কতদিন স্থায়ী থাকে এবং অন্য কোনোভাবে এই ভাইরাস অন্যদের শরীরে ছড়ায় কি-না। এ সময় তারা দেখতে পান, গুরুতর অসুস্থ রোগীদের শরীরে দীর্ঘসময় বেঁচে থাকছে করোনা।
তবে চীনা এই গবেষক দলের গবেষণা প্রতিবেদনে বিগত সময়ে প্রকাশ হওয়া প্রতিবেদনের একটি তথ্যের বিষয়ে মিল রয়েছে-সেটি হলো আক্রান্ত ব্যক্তির মলের মাধ্যমে অন্যদের মাঝে ছড়াতে পারে কোভিড-১৯।
চীনা গবেষক দলের এই গবেষণায় আরও দেখা গেছে, শ্বাসযন্ত্রে করোনাভাইরাসের টিকে থাকার মধ্যম সময়কাল ১৮ দিন।
Advertisement
গবেষকরা তাদের প্রতিবেদনে লিখেছেন, ‘যারা গুরুতরভাবে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের শ্বাসযন্ত্রের গভীরে আঘাত হেনেছে করোনা। এবং আক্রান্ত নারীদের চেয়ে পুরুষদের শরীরে বেশি সময়কাল টিকে ছিল এই ভাইরাস।’
এসআর/জেআইএম