শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় একজন ভিক্ষুক করোনা তহবিলে ১০ হাজার টাকা দান করেছেন। মঙ্গলবার এ ঘটনার দিনেই চাল চুরি করে ধরা পড়েছেন উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের এক নারী মেম্বার। তার বাড়ি থেকে ২৫ কেজি চাল উদ্ধারের পর থানায় মামলা হয়েছে।
Advertisement
জানা গেছে, ঝিনাইগাতীর কাংশা ইউনিয়নের গান্ধীগাঁও গ্রামের মৃত ইয়ার উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন (৮০)। ছয় সন্তানের জনক নাজিম উদ্দিনের জীবন চলে ভিক্ষা করে। ছাউনির মতো একটি ঘরে বসবাস করলেও তিনি দু’বছর ধরে ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় করেছেন। এবার বর্ষার আগেই ঘর ঠিক করার জন্যই এ সঞ্চয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে আশপাশে মানুষের আর্থিক দুরাবস্থা দেখে সিদ্ধান্ত বদল করেন।
খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ঝিনাইগাতীর ইউএনও রুবেল মাহমুদ ত্রাণ তহবিল গঠন করেছেন। তার মাধ্যমে গরিব মানুষ সহযোগিতা পাচ্ছেন। মঙ্গলবার জানতে পারেন ইউএনও মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের খাটুয়াপাড়া গেছেন চুরি করা চাল উদ্ধার করতে। তখন সেখানেই ছুটে যান বৃদ্ধ নাজিম উদ্দিন। ইউএনওকে কাছে পেয়ে তার হাতে তুলে দেন জমানো ১০ হাজার টাকা।
নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘ঘর ঠিক করবার জন্য ভিক্ষা কইরা ১০ হাজার ট্যাহা জমাইছিলাম। কিন্তু দেশের অহন খুব বিপদ। দেশের মানুষ কষ্ট করতাছে। তাই ইউএনও সাহেবের হাতে ট্যাহা দিলাম। তিনি দশেরে দেক। তারা খাইয়া বাচুক’।
Advertisement
ঝিনাইগাতীর ইউএনও রুবেল মাহমুদ বলেন, ‘একজন ভিক্ষুক অনেক কষ্ট করে ঘর তৈরির জন্য ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় করেছিলেন। সেই টাকা তিনি তহবিলে দান করলেন। অথচ আমি আজ এ ইউনিয়নে এসেছি মিনারা বেগম নামে সংরক্ষিত ওয়ার্ডের একজন মহিলা মেম্বারের বাড়ি থেকে চাল উদ্ধারে।
হতদরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করার জন্য দেয়া চালের মধ্যে ২৫ কেজি উদ্ধার হয়েছে তার বাড়ি থেকে। এখানে মিলেছে ২৭টি সরকারি ব্যাগ। মেম্বারকে আটক করা হয়েছে’।
এ ব্যাপারে মেম্বার মিনারা বেগম বলেন, ‘১৯ এপ্রিল চেয়ারম্যান নূরল ইসলাম তোতা চাল বরাদ্দ দেন। ২৩ জনকে ৫ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা ছিল। ১৮ জনকে দেওয়া হয়েছে। বাকিদের চাল চেয়ারম্যান নিজে দেবেন বলেছিলেন। আমার কাছে সেই চাল রাখতে গিয়ে ফেঁসে গেলাম’।
ঝিনাইগাতীর প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নান বলেন,‘চাল উদ্ধারের ঘটনায় আমি বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছি। আসামি করা হয়েছে মিনারা বেগমকে’।
Advertisement
এমএএস এমআরএম