ধর্ম

নিরাপদ পথচলায় নারী-পুরুষের কর্তব্য

আল্লাহ তাআলা হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালাম থেকে মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন। তাই সৃষ্টিতে সমতা বিধানের লক্ষ্যে যুগে যুগে আল্লাহ তাআলা সত্য দ্বীনসহ রাসূল পাঠিয়েছেন। নির্ধারণ করেছেন নারী-পুরুষের সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন, দুনিয়ার সব কর্মে দিয়েছেন দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ। পৃথিবীর আদিকাল থেকেই নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন চলে আসছে। আবার কখনো কখনো পুরুষও হয়েছে নির্যাতিত। সভ্যতার এ ধারাকে পরিবর্তন করেছে ইসলাম। বিশেষ করে নারীকে দিয়েছেন মর্যাদার আসন। সুতরাং উভয়ের জন্য নিরাপদ ভুবন চাইলে প্রত্যেককেই ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে। জাগো নিউজে তা তুলে ধরা হলো-ধর্মীয় অনুশাসনআল্লাহ তাআলা মানুষের বিবেককে স্বচ্ছ ও জাগ্রত রাখার জন্য  কুরআনের  অসংখ্য আয়াতে তাকওয়ার অধিকারী হতে বলেছেন। আল্লাহকে ভয় করার কথা বলেছেন। দিয়েছেন অসংখ্য উপদেশ। যৌন হয়রানির মতো ঘৃণ্য কাজকে সরাসরি নিষেধ করেছেন। চলাফেরায়, উঠাবসায় দিয়েছেন দিক নির্দেশনা। সংযত ব্যবহারের পাশাপাশি নিষেধ করেছেন অবাধ দৃষ্টি প্রয়োগের। আল্লাহ বলেন, `হে রাসুল!) ঈমানদার পুরুষদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে।` (সূরা নূর : আয়াত ৩০)আল্লাহ তাআলা কুরআনে আলাদা আলাদাভাবে নারী-পুরুষকে তার কর্মনীতি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। আদেশ, নিষেধ, উপদেশ রয়েছে সবার জন্য। উভয়েই নিজেকে নিরাপদ রাখতে নিজ থেকে সতর্ক থাকতে হবে। চলাফেরায়, পোশাক-পরিচ্ছেদে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন, `হে বনি আদম! আমি তোমাদের জন্য এমন পোশাক অবতীর্ণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থানকে আবৃত করে রাখবে এবং যা হবে (তোমাদের জন্য) ভূষণ। আর পরহেজগারির পোশাক, এটিই সর্বোত্তম।` (সূরা আরাফ : আয়াত ২৬)অবসর সময়ে যেখানে সেখানে আড্ডা না দিয়ে সময়কে কাজে লাগানো প্রত্যেক ঈমানদার মুসলমানের কর্তব্য। একান্তই যদি কাউকে আড্ডা বা আনন্দের জন্য রাস্তাঘাটে বসতে হয়, আনন্দ-বিনোদন করতে হয় তবে রাস্তার হক আদায় করে চলার প্রতিও তাগিদ রয়েছে ইসলামে।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা রাস্তায় বসা থেকে বিরত থাকো। অগত্যা যদি রাস্তাঘাটে বসতেই হয়, তখন রাস্তার হক আদায় করবে। রাস্তার হক হলো- চক্ষু অবনত রাখা, কাউকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকা, কেউ সালাম দিয়ে সালামের জবাব দেওয়া, সৎ কাজের আদেশ দেয়া এবং অসৎ কাজে বাধা দেয়া। (বুখারি)কোনো মেয়েলোক যখন রাস্তায় বের হবে চলাফেরায় নম্র হবে। অন্য পুরুষের সঙ্গে আবেদনময়ী স্বরে কথা না বলা, সুস্থ সংস্কৃতি ও পারিবারিক বন্ধন সুদৃঢ়করণসহ সবক্ষেত্রে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা। যখনই কোনো একজন বিবাহের উপযুক্ত হয়, তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, `হে যুবসমাজ! তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহ করতে সক্ষম, তারা যেন বিবাহ করে নেয়। আর যে ব্যক্তি বিবাহ করতে (শারীরিক বা অর্থনৈতিকভাবে) অক্ষম, সে যেন রোজা রাখে। কেননা রোজা তার যৌনক্ষুধাকে অবদমিত করে। (বুখারি)পরিশেষে....নারী-পুরুষ উভয়েই যখন ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলবে, তখন চারিত্রিক উন্নতি সাধন হবে, মাদকাসক্ত হওয়া থেকে রক্ষা পাবে এবং অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা থেকে মুক্ত থাকবে পরিবার ও সমাজ। নারী-পুরুষের পৃথিবীতে উভয়েই থাকবে নিরাপদ। সমাজে নারী ও পুরুষ নির্যাতন বলতে কোনো কিছুই থাকবে না। তাইতো জাতীয় কবি লিখেছিলেন- `বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর,/অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।` আল্লাহ উভয়কে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।জাগো ইসলামে লেখা পাঠাতে ই-মেইল : jagoislam247@gmail.comজাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।এমএমএস/পিআর

Advertisement