কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাব প্রতিষ্ঠার ১৮ দিনের মাথায় সেখানে চারজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।
Advertisement
রোববার (১৯ এপ্রিল) সংগৃহীত ৭৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত পাওয়া ৬৩ জনের ফলাফলে চারজনের শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। ৬৩ জনের মধ্যে ২৬ জন মহেশখালীর। আর করোনা আক্রান্ত চারজনের মধ্যে ৩ জন মহেশখালীর এবং ১ জন টেকনাফের।
এ নিয়ে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৫ জনের করোনা পজেটিভ ধরা পড়লো। তাদের মধ্যে একজন পাবর্ত্য নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম এলাকার বাসিন্দা। তিনি সম্প্রতি তাবলীগ থেকে ফিরেছেন।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক, ট্রপিক্যাল মেডিসিন ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ শাহজাহান নাজির জানান, রোববার ৭৩টি নমুনা আসে ল্যাবে। সেখান থেকে ৬৩ জনের পরীক্ষার পর ৪ জনের করোনা পজেটিভ পাওয়া যায়। যাদের নমুনা ল্যাবে আনা হয় তাদের শরীরে করোনার কোনো উপসর্গই দেখা যায়নি। শুধু ভিন্ন জেলা থেকে এলাকায় আসায় সন্দেহজনক হিসেবে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তিনি আরও জানান, ৬৩ পরীক্ষার মাঝে ২৬ জনই মহেশখালীর। তাদের মধ্যে ৩ জনের রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। রোববার বাকি থাকা ১০ জনের ফলাফল সোমবার সকালে দেয়া হবে বলে।
Advertisement
জানা গেছে, কক্সবাজার জেলা গত ৮ এপ্রিল থেকে লকডাউন থাকলেও মহেশখালীসহ বিভিন্ন এলাকায় ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও সাতকানিয়া থেকে এসে কৌশলে অবস্থান করছেন। ব্যবসায়িক কারণে বা লকডাউন দীর্ঘ হওয়ায় সেসব স্থান থেকে তারা মহেশখালীসহ বিভিন্ন এলাকায় আসছে বলে জানা গেছে।
মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহফুজুর রহমান জানান, পরীক্ষার জন্য মহেশখালীর যে ২৬ জনের নমুনা পাঠানো হয়, তাদের বেশিরভাগের শরীরে করোনার কোনো উপসর্গ ছিল না। শুধু বাইরের জেলা থেকে আসার তথ্য নিশ্চিত হয়েই তাদের পরীক্ষার আওতায় নেয়া হয়। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ বা বাইরের জেলা থেকে যারা এসেছে তাদের ভেতর করোনার উপস্থিতি থাকার আশংকা রয়েছে।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ ডা. অনুপম বড়ুয়া বলেন, কক্সবাজার ল্যাবে প্রতিদিন ৯৬ জন রোগীর করোনার নমুনা পরীক্ষা সম্ভব। উপজেলা ফ্লু কর্নার থেকে সংগ্রহ করে নমুনাগুলো এখানে পাঠানো হয়। ইচ্ছে করলে যে কেউ করোনা পরীক্ষা করার সুযোগ নেই। রোববার পরীক্ষা করা ৬৩টি নমুনারই প্রতিবেদন ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। ওখান থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবটিকে ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠঅন (আইইডিসিআর) করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নির্ধারণ করেছে। গত ১ এপ্রিল থেকে ল্যাবটি চালু হয়ে প্রথম ৬ দিনে ২৪ জন, ৭ এপ্রিল ২৫, ৮ এপ্রিল ২৪ জন, ৯ এপ্রিল ২৭ জন, ১০ এপ্রিল ৩৭ জন, ১১ এপ্রিল ৯ জন, ১২ এপ্রিল ৩২ জন, ১৩ এপ্রিল ২৪ জন, ১৪ এপ্রিল ৩১ জন, ১৫ এপ্রিল ১৭ জন ও ১৬ এপ্রিল ৪১ জন, ১৭ এপ্রিল ৩৯ জন, ১৮ এপ্রিল ১৩ জন এবং ১৯ এপ্রিল ৬৩ জন সন্দেহভাজন রোগীর পরীক্ষা করা হয়েছে এই ল্যাবে। সবমিলিয়ে পরীক্ষা হওয়া রোগীর সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৪০৬ জন। সেখানে নাইক্ষ্যংছড়ির একজনসহ ৫ জনের রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে।
Advertisement
সায়ীদ আলমগীর/এমএসএইচ