আন্তর্জাতিক

করোনা থেকে বেঁচে ফেরার গল্প শোনালেন বেলজিয়ামের চিকিৎসক

সারাবিশ্বে এখন এক আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত প্রাণঘাতী এই ভাইরাস বিশ্বের ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এখন পর্যন্ত ২৩ লাখ ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। অপরদিকে, ৬ লাখ ৫ হাজার ৭১৮ জন করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছে।

Advertisement

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনায় যেমন মারা যাচ্ছে মানুষ আবার এটা থেকে সুস্থও হয়ে উঠছে। তবে অন্যান্য রোগের তুলনায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সুস্থ হয়ে ওঠাটা কিছুটা জটিল। কারণ এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়।

সে কারণে এ ধরনের রোগীর আশে-পাশে যারা থাকেন তারাও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়তে পারেন। তাই এ ধরনের রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত থাকা চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্মীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বহু চিকিৎসক করোনা রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে নিজেরাও এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, অনেকই শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হেরে গেছেন।

Advertisement

তবে আজ আমরা কোনো হেরে যাওয়া গল্প নয় বরং প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে বেঁচে ফেরা এক চিকিৎসকের গল্প শুনব। ব্রাজিলের এই চিকিৎসক একজন ইউরোলজিস্ট।

কোভিড-১৯ থেকে বেঁচে ফেরার অভিজ্ঞতাকে তিনি অবিশ্বাস্য বলে উল্লেখ করেছেন। তিন সপ্তাহ কোমায় থাকার পর তাকে ইন্টেন্সিভ কেয়ারে রাখা হয়েছিল। সম্প্রতি সুস্থ হওয়ায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন তিনি।

ব্রাসেলসের ডেল্টা চিরেক হাসপাতাল থেকে অ্যান্তয়িন সেসিন নামের ওই চিকিৎসক বলেন, আমি যেন আমার শেষ দেখতে পাচ্ছিলাম। আমি ভেবেছিলাম যে, আমি হয়তো মারা যাব। আর হয়তো ঘুম থেকে উঠব না, হয়তো বাঁচব না।

৫৮ বছর বয়সী এই চিকিৎসক এবং তার টিমের সব সদস্যের দেহে করোনার লক্ষণ ধরা পড়ে। তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকায় তাকে ইন্টেন্সিভ কেয়ারে ভর্তি করা হয়।

Advertisement

এরপর প্রায় তিন সপ্তাহ তিনি কোমায় ছিলেন। কিন্তু বেঁচে ফেরার প্রচণ্ড ইচ্ছা তাকে আবারও জাগিয়ে তুলেছে। গত মঙ্গলবার তাকে ইন্টেন্সিভ কেয়ারে স্থানান্তর করা হয়। তিনি জানান, কোমায় থাকা অবস্থায় তিনি তার বাবাকে দেখতে পেয়েছেন এবং তার সঙ্গে কথা বলেছেন। সেসিনের বাবা ৪ বছর আগে মারা গেছেন।

তিনি বলেন, আমার কাছে সবচেয়ে বেশি আনন্দের বিষয় হচ্ছে আমি ঘুম থেকে উঠে আমার বন্ধুদের মুখ দেখতে পেয়েছি। এটা আসলেই ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।

এখন তিনি তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। বেলজিয়ামে এখন পর্যন্ত ৩৮ হাজার ৪৯৬ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। অপরদিকে মারা গেছে আরও ৫ হাজার ৬৮৩ জন।

টিটিএন/এমএস