প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে লকডাউনে বন্ধ রয়েছে ব্যবসা। অচল হয়ে পড়ছে বিশ্ব বাণিজ্য। এতে নেতিবাচক ধারায় থাকা দেশের রফতানি আয় আরও কমেছে।
Advertisement
অর্থবছরের শুরুতে হোঁচট খায় রফতানি আয়। এরপর থেকেই নেতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। করোনা বিশ্ব পরিস্থিতিতে আগামীতে রফতানি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি (২০১৯-২০) অর্থবছরের ৯ মাস (জুলাই-মার্চ) শেষে রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৮৯৭ কোটি ডলার। এই আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ কম।
একক মাস হিসাবে মার্চে রফতানি আয় হয়েছে ২৭৩ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ দশমিক ২৯ শতাংশ কম।
Advertisement
এদিকে বিজিএমইএর তথ্য বলছে, চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ১৫ দিনে ১৯ কোটি ৪০ লাখ ডলারের পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ। গত বছরের একই সময়ের তুলানায় ৮৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ কম। ২০১৯ সালের এপ্রিলের প্রথম ১৫ দিনে রফতানি হয়েছিল ১১৯ কোটি ২৯ লাখ ৯০ হাজার ডলারের পোশাক।
আগের মাস মার্চেও রফতানিতে বড় ধাক্কা খায় পোশাক খাত। গত মার্চে ১৯৭ কোটি ২২ লাখ ডলারের পোশাক রফতানি হয়, যা গত বছরের মার্চের চেয়ে ২৬ দশমিক ৭০ শতাংশ কম। ২০১৯ সালের মার্চে ২৬৯ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছিল।
এদিকে পোশাক খাতের এ ভয়াবহ সংকটের মধ্যে প্রতিদিনই বাতিল হচ্ছে পোশাকের ক্রয়াদেশ। সবশেষ ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের তৈরি পোশাক খাতের এক হাজার ১৪২টি কারখানার ৯৮ কোটি পোশাক পণ্যের রফতানি আদেশ বাতিল ও স্থগিত করেছে। যার আর্থিক পরিমাণ ৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন বা ৩১৭ কোটি মার্কিন ডলার।
বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে ‘তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, প্রতি মুহূর্তে ক্রেতারা ক্রয় আদেশ স্থগিত করছেন। বলছেন স্থগিত। তবে আমাদের জন্য এটি স্থগিত নয় বাতিল। এমন পরিস্থিতিতে পোশাক খাত ভয়াবহ সংকটে আছে।
Advertisement
তিনি বলেন, একের পর এক অর্ডার বাতিল শুধুই নয় আগের পণ্যও ক্রেতারা নিচ্ছেন না। যাও কিছু নিচ্ছেন তার বিল ঠিকমত পরিশোধ করছেন না। আমাদের রফতানি নেই বললেই চলে। এখন অধিকাংশ কারখানার উৎপাদন বন্ধ। আগামীতে কী হবে বলা যাচ্ছে না।
বিজিএমইএ জানায়, এটা আমাদের একার সমস্যা নয় বিশ্বব্যাপী সংকট। এখন আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে ক্রেতাদের কাছ থেকে সহযোগিতা পাওয়া যায়। পাশাপাশি অর্ডার বাতিল ও স্থাগিতাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়ে কীভাবে পদক্ষেপ নেয়া যায় এটির ওপর জোর দিতে হবে। এটাই করছি।
এসআই/এএইচ/পিআর