বিশ্বব্যাপী ভয়ঙ্কর ছোঁয়াচে রোগ করোনা ভাইরাস ঠেকাতে যখন রাষ্ট্রযন্ত্র রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে, সারাদেশে জ্যামিতিক হারে করোনা রোগী ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে ঠিক তখনই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে।
Advertisement
ফলে বোঝার ওপর শাকের আঁটি প্রবাদের মতো করোনার সঙ্গে নতুন আশঙ্কা হিসেবে যুক্ত হয়েছে ডেঙ্গু।
সরকারি স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গত ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে ২৮৯ ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে জানুয়ারিতে ১৯৯, ফেব্রুয়ারিতে ৪৫, মার্চে ২৭ ও ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত ১৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, এপ্রিল থেকে ডেঙ্গুর পিক মৌসুম শুরু হয়, চলে অক্টোবর পর্যন্ত। এ সময় প্রচণ্ড গরমের পর হঠাৎ থেমে থেমে স্বল্পমেয়াদি বৃষ্টিতে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার লার্ভার প্রজনন সক্ষমতা খুব বেশি মাত্রায় বৃদ্ধি পায়। ফলে এডিস মশার বিস্তারও ঘটে বেশি।
Advertisement
নগরবাসীরা বলেছেন, গত কয়েকদিন ধরে মশার উপদ্রব বাড়লেও ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটি করপোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রম তেমন চোখে পড়ছে না। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যস্ত থাকায় ডেঙ্গু জনসচেতনতা তৈরিতে প্রচার প্রচারণাও নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে জ্বরের রোগী দেখলেই করোনা আক্রান্ত মনে করে চিকিৎসক ও নার্সরা পারতপক্ষে রোগীর কাছে আসছেন না। যারা আসছেন তারা পিপিই পরে তবেই আসছেন। এক্ষেত্রে হঠাৎ ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লে হাসপাতালে সুচিকিৎসা পাওয়া মুশকিল হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি সর্বমোট ২৮৯ রোগীর মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ১৬২ এবং বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ৬৩ এবং অন্যান্য বিভাগের হাসপাতালে ৬৪ রোগী ভর্তি হন।
সরকারি হাসপাতালের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫০, স্যার সলিমুল্লাহ মিটফোর্ড হাসপাতালে ২২, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ১৯, শহীদ সোহরোওয়ার্দী হাসপাতালে ১৩, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে দুই, মুগদা হাসপাতালে দুই, বিজিবি হাসপাতালে চার, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চার, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাললে ২৩ এবং কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ২৩ ভর্তি হন।
তবে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে প্রায় সকলেই চিকিৎসা গ্রহণ শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বর্তমানে ছয়জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে রাজধানী ঢাকার সরকারি হাসপাতালে তিনজন, বেসরকরিতে দুইজন ও ঢাকার বাইরে একজন ভর্তি রয়েছেন।
Advertisement
এমইউ/এএইচ/পিআর