খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইউরোলজি বিভাগের চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হবার পর নড়েচড়ে বসেছে খুমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের ওয়ার্ড সংকোচন, টিচার্স লাউঞ্জসহ কয়েকটি কক্ষ লকডাউন, চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয় স্টাফদের বিনা প্রয়োজনে ওয়ার্ডে না রাখাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে হাসপাতালে পিপিই সংকট রয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। যা এ সময় খুবই জরুরি। খুমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শনিবার খুলনা মেডিকেল কলেজের ইউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। কিন্তু সকালে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেন। তার করোনা পরীক্ষার রেজাল্ট পজিটিভ এর বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। চিকিৎসকরা তাদের নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন দাবি তোলেন।
Advertisement
একাধিক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, হাসপাতালে সব চিকিৎসকরা এক সঙ্গে ওয়ার্ডে না গিয়ে তাদের রোস্টার করে রিজার্ভে রাখা হলে চিকিৎসকদের করোনা আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা কমে যাবে। একইভাবে স্টাফদেরও এ ব্যবস্থার আওতায় আনা গেল তাদেরও ঝুঁকি কমে যাবে। জরুরি বিভাগে রোগী ভর্তির সংখ্যাও কমিয়ে দেয়ার দাবি জানান তারা।
এদিকে চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হবার পর রোববার আরও ১২ জন চিকিৎসকের করোনা পরীক্ষা করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে। একই সঙ্গে খুমেকের টিচার্স লাউঞ্জ, আক্রান্ত চিকিৎসকের কক্ষ, তিনি যে ভবনে থাকতেন সেই ভবন লকডাউন করা হতে পারে।
এসব বিষয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুন্সী রেজা সেকেন্দার বলেন, করোনা পরিস্থিতির আগে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী থাকতো ১৪শ থেকে ১৫শ। কিন্তু এখন সেখানে রোগী থাকছে ৩শ'রও কম। ফলে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। হাসপাতালের এক একটি বিভাগের জন্য একাধিক ওয়ার্ড এ মুহূর্তে প্রয়োজন না থাকায় মেডিসিন, সার্জারি ও গাইনি ওয়ার্ডগুলো এখন একত্রিত করা হবে। সেখানে চিকিৎসকদের সেবা প্রদানের বিষয়ে ভাগ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যাতে একাধিক চিকিৎককে এক সঙ্গে ওয়ার্ডে যেতে না হয়।
Advertisement
পরিচালক বলেন, হাসপাতালে একশ শয্যার করোনা ইউনিট ও ৩০ শয্যার ফ্লু কর্ণার নামে নতুন দুটি বিভাগ চালু হয়েছে। এজন্য কোনো আলাদা চিকিৎসক ও স্টাফ দেয়া হয়নি। ফলে অন্যান্য ওয়ার্ড থেকে চিকিৎসক ও স্টাফদের এখানে আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, হাসপাতালে পিপিই সংকট রয়েছে। প্রতিদিন ৫০০ পিপিই’র দরকার। এটা ছাড়া কেউ রোগীর কাছে যেতে পারবে না। সেই হিসেবে মাত্র ১৮ দিনের পিপিই রয়েছে। তবে পিপিই’র জন্য চাহিদা পত্র দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, খুলনা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর মেশিনে সর্বমোট ৬২৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এর মধ্যে ৫ জনের শরীরে করোনা পাওয়া গেছে। ২ জনই খুলনার।
নগরীর ছোট বয়রা করীম নগর এলাকায় করোনা শনাক্ত হওয়া ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এসএম কামাল বলেন, ছোট বয়রা করীমনগরে আক্রান্ত ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা ভালো তিনি সুস্থ আছেন। কয়েকদিনের মধ্যে তার আবার ও পরীক্ষা হবে।
Advertisement
আলমগীর হান্নান/এমএএস/পিআর