নাটোরের সীমান্তপথ বন্ধ করে দেয়া হলেও নানাভাবে পালিয়ে প্রতিদিন ঢুকছে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ও আশুলিয়াফেরত লোকজন।
Advertisement
তারা হোম কোয়ারেন্টাইন না মেনে ইচ্ছামতো চলাফেরা করায় স্থানীয়দের মধ্যে বিরাজ করছে করোনা আতঙ্ক। পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইনে নিচ্ছে পুলিশ ও প্রশাসন। কিন্তু বিশাল সংখ্যার লোকজনকে এখনও কোয়ারেন্টাইনে নেয়া যায়নি। যারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ফলে করোনা সংক্রমণ আতঙ্ক বেড়ে গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১৮ এপ্রিল) ঢাকা-গাজীপুর থেকে সড়কপথে সিংড়ায় পিককাপযোগে আসার পথে চৌগ্রাম চেকপোস্টে একদল নারী-পুরুষকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা সিংড়ার চৌগ্রাম, ছাতারদিঘী গ্রামে আসছিল। পরে সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেন।
একই দিনে ঢাকা থেকে নাটোরের লালপুরের ওয়ালিয়ায় আসেন বড়াইগ্রামের ১০ জন নারী-পুরুষ। ঢাকা থেকে তারা যানবাহনে বড়াইগ্রামে এলে আটক করে পুলিশ। এরপর তাদের নাম-ঠিকানা নিয়ে ওয়ালিয়া পুলিশ ফাঁড়িকে অনুরোধ করেন হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করার জন্য।
Advertisement
অপরদিকে, গত বুধবার একটি প্রাইভেটকার যাত্রী নামিয়ে ফিরে যাওয়ার পথে বড়াইগ্রাম চেকপোস্টে পুলিশ চালককে থামার নির্দেশ দেয়। ওই সময় চালক না থেমে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার পথে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে আহত হন।
নাটোরের সিংড়ায় পশ্চিম ভেংরী ও মশিগাড়ী গ্রামে গত বুধবার ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছেন দুই শতাধিক লোক। তাদের এখনও হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়নি। প্রকাশ্যেই চলাফেরা করছেন তারা।
নাটোর সদরের ছাতনী দিয়ারের ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ থেকে কিছু লোক ঢুকেছেন। তারা প্রকাশ্যে চলাফেরা করছেন। একই অবস্থা বাঙ্গাবাড়িয়া গ্রামের। জেলার সাত উপজেলার প্রতিটি উপজেলায় কয়েক হাজার মানুষ ঢুকে পড়েছেন। যারা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মিশেছেন সবার সঙ্গে। এতে নাটোরে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে গেছে।
এ বিষয়ে নাটোরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মাদ শাহরিয়াজ বলেন, ঢাকা-নারয়ণগঞ্জ-আশুলিয়া বা করোনা সংক্রমিত জেলার লোকজন আসার কথা জানতে পারলে তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে নিচ্ছি। তাদের খাবারের নিশ্চিয়তা দিচ্ছি। তারপরেও প্রশাসনের অগোচরে অনেকেই রয়ে গেছেন। যাদের খুঁজে বের করে হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করছে আমাদের ভ্রাম্যমাণ মোবাইল টিম।
Advertisement
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, হাইওয়ে রোডের পাশ দিয়ে জেলায় ঢুকে গেছে অসংখ্য লিঙ্ক রোড। তারা চেকপোস্ট এড়িয়ে বিকল্পপথে জেলায় ঢুকছেন। এই ঢুকে পড়া ঠেকাতে নিয়মিত কাজ করছে হাইওয়ে পুলিশসহ আমাদের থানা, ডিবি, ট্রাফিক ও রিজার্ভ ফোর্স। ইতোমধ্যে জেলা পুলিশ ১১৭১ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে নিয়েছে। তাদের বাড়িতে লাল পতাকা টানিয়ে দেয়া হয়েছে। জনগণকে সচেতন হওয়ার এবং সামাজিকভাবে সবাইকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি।
রেজাউল করিম রেজা/এএম/এমকেএইচ