বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) করোনা ইউনিটে ৮০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে সেখানে গত দু’দিনে ৩ জন রোগীর মৃত্যু হলো।
Advertisement
করোনা ইউনিটে মারা যাওয়া তিন জনের মধ্যে দুইজনের নমুনা করোনা পজিটিভ এসেছে। বাকি একজনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়নি। ওই ৩ জন রোগী শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আগৈলঝাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক দম্পতি এবং মেডিকেল কলেজের ৫ম বর্ষের এক ছাত্রকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় শনিবার সকালে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাদেরকে বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন জানান, জেলার সরকারি হাসপাতালের দুই জন চিকিৎসক, মেডিকেল কলেজের এক ছাত্র, তিনজন সেবিকা (নার্স) ও হাসপাতালের ৫ জন কর্মচারীর শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে চিকিৎসক দম্পতি ও মেডিকেল কলেজের এক ছাত্রকে বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ডা. মনোয়ার হোসেন আরও জানান, আক্রান্ত চিকিৎসক দম্পতি, সেবিকা ও কর্মচারীদের মনোবল অটুট রাখতে সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আশা করছি সকলের দোয়ায় তারা শিগগিরই সুস্থ হয়ে উঠবেন।
Advertisement
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম বাকির হোসেন জানান, শনিবার সকাল ১০টা ১০ মিনিটে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৮০ বছর বয়সী এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি পিরোজপুরের কাউখালীর বিয়ারঝুড়ি এলাকায়। জ্বর, সর্দি-কাশি নিয়ে গত ১৫ এপ্রিল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। ১৬ এপ্রিল তার নমুনা সংগ্রহ করে মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছিল। ১৭ এপ্রিল রাতে তার রিপোর্ট পাওয়া যায়। নমুনা পরীক্ষায় তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
ডা. এসএম বাকির হোসেন আরও জানান, এর আগে শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে বরগুনার বেতাগীর ফুলতলা এলাকার ৭২ বছর বয়সী এক রোগীর মৃত্যু হয়। জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। মারা যাওয়ার পর শুক্রবার রাতে পাওয়া তার নমূনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।
এছাড়া একইদিন ভোর ৪টার দিকে করোনা ইউনিটে ৪২ বছর বয়সী এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। ওই নারী পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের পাঁচবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসকরা তাকে করোনা ইউনিটে স্থানান্তর করেন। নমুনা সংগ্রহের পর শুক্রবার রাতে তার পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ডা. মো. বাকির হোসেন বলেন, শনিবার দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ২২ জন রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে ১৬ জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
এদিকে ছাত্রাবাসে থেকে মেডিকেল কলেজে পড়া ওই ছাত্রের করোনা আক্রান্তের খবরে মেডিকেল কলেজের পেছনের গেট স্থানীয়রা বাঁশ-কাঠ দিয়ে আটকে দিয়েছে বলে হাসপাতল সূত্রে জানা গেছে।
Advertisement
সাইফ আমিন/এফএ/এমকেএইচ