প্রবাস

করোনায় থমকে গেছে বিশ্ব

মাহমুদুল হাসান (ফরিদ), স্পেন টেনেরিফ থেকে

Advertisement

বর্তমান বিশ্বের ভয়ঙ্কর একটি নাম ‘করোনাভাইরাস’। এই নামটি পৃথিবীতে কারোই অজানা থাকার কথা নয়। পৃথিবীর প্রায় দুই শতাধিকের বেশি দেশে আক্রমণ করেছে এ ভাইরাস। আক্রান্ত হয়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। ঠিক সময়ে আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত না করায় ইউরোপের স্পেন এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে।

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসে থমকে গেছে বিশ্ব। বন্ধ হয়ে গেছে সবরকম স্বাভাবিক কার্যক্রম। আক্রান্ত দেশগুলোতে চলছে স্তব্ধাবস্থা। দোকান-পাট, ব্যবসায় বাণিজ্য, স্কুল, কলেজ সব বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

সারাবিশ্বে সারিবদ্ধভাবে দেখা যাচ্ছে হাজারও লাশের মিছিল। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালগুলিতে মৃত্যুর সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করে যাচ্ছে বেঁচে থাকার আশায়। হাজারো মানুষ তার প্রিজনদের ছেড়ে নেমেছে এক অজানা যুদ্ধে। এই যুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার জন্য কতকিছুই করে যাচ্ছে সবাই। কিন্তু আজ যেন থমকে গেছে পুরো পৃথিবী। আতঙ্কিত হয়ে পড়ে আছে সমগ্র জাতি। নেই কোনো ভেদাভেদ। তবুও মিলছে না কোনো সমাধান।

Advertisement

সমগ্র দুনিয়া অচল হয়ে পড়ে আছে আমাদের মাঝে। প্রকৃতি ফিরে পেয়েছে আপন সাজ। যেন সাজতে শুরু করেছে নিজের মতো করে। সমুদ্রে জলের মৃদুময় স্রোতের আওয়াজে যেন জুড়িয়ে যায় প্রাণ। নেই কোনো জন মানুষের ভিড়, সড়কগুলো আজ শুধুই ফাঁকা। জনশূন্য এই সড়কগুলো গত দুটি মাস আগেও ছিল কানায় কানায় ভরপুর।

করোনার কারণে দরিদ্রদের মুখে খাবার তুলে দেয়ার ব্যবস্থা জাতিসংঘ করতে না পারলে অন্তত তিন কোটি মানুষ অনাহারে মারা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব খাদ্য সংস্থার (ডব্লিউএফপি) প্রধান ডেভিড বেসলে।

এদিকে স্পেনের স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল কাতালোনিয়া কর্তৃপক্ষ বুধবার থেকে দেশটির হাসপাতাল, বাসা ও সরকারি-বেসরকারি নার্সিং হোমে করোনায় মৃতদের সংখ্যা নথিভুক্ত করছে।

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে জারিকৃত লকডাউনে গত সোমবার থেকে শিথিলতা এনেছে স্পেন। দেশটির বেশকিছু খাতের কর্মীদের কাজে ফেরার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এতে লাখ লাখ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন।

Advertisement

কয়েকদিন ধরে দেশটিতে করোনায় মৃত্যু এবং সংক্রমণের সংখ্যা কমে আসায় পরিস্থিতির উন্নতি দেখছে স্পেন সরকার। যে কারণে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, নির্মাণ শিল্প ও উৎপাদন খাত পুনরায় খুলে দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়। তবে লকডাউন শিথিলের পরদিন থেকেই দেশটিতে সংক্রমণ এবং মৃত্যু আবারও বাড়তে শুরু করেছে।

নির্দিষ্ট কিছু খাতের মানুষকে কাজে ফেরার অনুমতি দেয়া হলেও দেশটির অধিকাংশ মানুষকে এখনও ঘরেই কাটাতে হবে। আগামী ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত দোকান-পাট, বার, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য জনসমাগমপূর্ণ এলাকা বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে দেশটি সরকার।

পৃথিবীর সমগ্র দেশগুলোর দলীয় সরকার প্রধানদের উদ্বিগ্ন হতে দেখা গেছে। একটা কথাই ভেসে বেড়াচ্ছে সবার মুখে, হ্যাঁ সবাই তাকিয়ে আছে মহান আল্লাহ রাব্বুল আল-আমিনের সাহায্যের দিকে। একমাত্র তিনিই পারেন সমাধান দিতে।

গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথমবারের মতো করোনার উপস্থিতি ধরা পরে। এরপর থেকে বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে এই প্রাণঘাতী ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে।

এমআরএম/জেআইএম