৭শ নাবিককে কোয়ারেন্টাইনে পাঠাবে তাইওয়ান। শনিবার তাইওয়ান সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত পালাউ দ্বীপপুঞ্জে সম্প্রতি একটি মিশন শেষ করে এসেছেন ওই নাবিকরা।
Advertisement
কিন্তু সেখান থেকে ফেরার পর তিন নাবিকের দেহে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়েছে। এরপরেই ওই দলে থাকা ৭শ নাবিককে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দ্বীপরাষ্ট্র পালাউতে তাইওয়ানের নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজ একটি মিশনে অংশ নিয়েছিল। চীনের সায়ত্ত্বশাসিত অঞ্চল তাইওয়ানের সঙ্গে মাত্র ১৫টি দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। এর মধ্যে পালাউ অন্যতম।
গত মার্চের মাঝামাঝিতে পালাউতে গিয়েছিলেন তাইওয়ানের নাবিকরা। সেখানে এক মাস থাকার পর তারা দেশে ফিরেছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী চেন শিন চুং।
Advertisement
তিনি আরও জানিয়েছেন, নাবিকরা সবাই একই জাহাজে কোয়ার্টার ভাগাভাগি করে ছিলেন। সে কারণে ওই তিন জাহাজে থাকা ৭শ নাবিকের সবাইকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েন মিশন শেষ করে আসা নাবিকদের জন্য আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিন নাবিক করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় তিনি তীরে অবস্থান করেই নাবিককের উদ্দেশে হাত নেড়ে তাদের স্বাগত জানান।
প্রেসিডেন্টের স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে এমন আশঙ্কায় তাকে নাবিকদের কাছ থেকে দূরেই রাখা হয়েছে। এর আগে তাইওয়ানের সামরিক বাহিনীর কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়নি। সেখানে এবারই প্রথম নৌবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে কেউ প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত হলো।
চীনের একেবারে পাশেই অবস্থান করলেও তাইওয়ানে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম। ওই অঞ্চলে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৩৯৮ জন। অপরদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৬ জন।
Advertisement
ইতোমধ্যেই করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছে ১৭৮ জন। অর্থাৎ ওই অঞ্চলে আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় অধিকাংশ মানুষই প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছে।
এদিকে, এখন পর্যন্ত চীনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮২ হাজার ৭১৯। দেশটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ২৭ জন। এখন পর্যন্ত চীন মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৬৩২ জনের।
তবে চীনেও সুস্থ হওয়ার হার অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। দেশটিতে ইতোমধ্যেই করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছে ৭৭ হাজার ২৯ জন। তবে ৮৫ জনের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরেই প্রথম করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপর সেখানে করোনার কারণে মহামারি পরিস্থিতি তৈরি হয়। কিন্তু এর ভয়াবহতা তাইওয়ানকে স্পর্শ করতে পারেনি।
শুধুমাত্র চীন নয়, অনেক প্রতিবেশী দেশের তুলনায় তাইওয়ানে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা অনেক কম। করোনার প্রাদুর্ভাবের পর থেকেই এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে তাইওয়ান সরকার। তার সুফলও পেয়েছে তারা।
এদিকে, পালাউয়ের প্রেসিডেন্ট টমি রেমেনজিসাও রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তার দেশে একজনও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। ওই দ্বীপরাষ্ট্রের জনসংখ্যা বর্তমানে ২০ হাজার। তিনি জানিয়েছেন, এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে তিনি বাইরের দেশের সঙ্গে তার দেশের সীমানা বন্ধ করে দেবেন।
টিটিএন/এমকেএইচ