শিক্ষা

আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি

 

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি আরও দীর্ঘায়িত করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে রোজার ছুটির সঙ্গে বর্তমানের ছুটি মিলিয়ে ঈদের পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হতে পারে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) থেকে জানা গেছে। অর্থাৎ করোনার প্রকোপে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি আগামী ৩০ মে পর্যন্ত করা হচ্ছে।

Advertisement

দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশেও এটি ছড়িয়ে পড়েছে ৪০টি অধিক জেলায়। বাংলাদেশে দুই হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে ৮৪ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। অনেকে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে যাচ্ছেন।

এমন পরিস্থিতি বিবেচনা করে করোনা সংক্রমণ রোধে গত ২৬ মার্চ থেকে আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৩১ দিনের ছুটি চলছে দেশে। যদিও গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে করোনা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হওয়ায় সারাদেশকে সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা অব্যাহত রাখতে টেলিভিশনে পাঠদানের ব্যবস্থা করেছে সরকার।

Advertisement

এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, যেকোনো ভাবেই শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা আমাদের নিশ্চিত করা প্রধান দায়িত্ব, পরিস্থিতির উন্নতি না হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কোনো চিন্তা করা যায়না।

তিনি বলেন, পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াভয় আকারে রূপ নিচ্ছে, এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে শিক্ষার্থীদের সংকটের মধ্যে ফেলা যাবে না। ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত না হলেও এ বিষযটি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এর আগে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার ১৭ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে সরকারি ছুটি আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ঘোষণা করা হলে তার সঙ্গে সমন্বয় করে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি ঘোষণা করা হয়। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে, স্থগিত রাখা হয়েছে এসএসসি-সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিপিই’র মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ শনিবার জাগো নিউজকে বলেন, পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে তাতে শিক্ষার্থীদের ছুটি দীর্ঘায়িত করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতির উপর বিবেচনা করে এ ছুটি আরো বাড়ানো হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যালয় খোলা হবে না, এ জন্য ছুটি বাড়ানোর চিন্তাভাবনা চলছে। এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হতে পারে।

তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান তিনি।

এদিকে ছুটি দীর্ঘয়িত করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন জাগো নিউজকে বলেন, ‘করোনার যা পরিস্থিতি তাতে হ্যাঁ ছুটি বাড়ানোর তো প্রয়োজন হবে। কিন্তু আমাদেরতো কিছু বিষয় চিন্তা করতে হবে। এখন বোরো ধান কাটার মৌসুম। হাওরাঞ্চলসহ যে জায়গাগুলোতে বেশি বোরো হয় সেখানে কৃষক যেতে না পারলে অবস্থা খারাপ হবে।’

তিনি বলেন, ‘ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সবকিছু বিবেচনা করে হয়তো প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

তবে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ছুটি হয়তো আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে ২ মে পর্যন্ত করা হতে পারে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞায় শিথিলতা আসতে পারে।

এমএইচএম/এসএইচএস/পিআর