খেলাধুলা

শেষ বলের ছক্কায় কোটি ভারতীয়র হৃদয় ভেঙেছিলেন মিঁয়াদাদ

তখনও পর্যন্ত ওয়ানডে ফরম্যাটে বড় কোন শিরোপা জেতেনি পাকিস্তান ক্রিকেট দল। আন্তর্জাতিক মঞ্চেও বলা চলে তেমন সাফল্য ছিল না তাদের। লড়াকু পারফরম্যান্স আর একক নৈপুণ্যের কল্যাণেই তখন বেশিরভাগ ম্যাচ জিতত পাকিস্তান।

Advertisement

তাদের শিরোপাখরা ঘুচেছিল আজ থেকে ঠিক ৩৪ বছর আগে। তাও যেনতেনভাবে নয়। চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে শেষ বলের ছক্কায় হারিয়েছিল পাকিস্তান। জিতে নিয়েছিল অস্ট্রেলেশিয়া কাপের শিরোপা। সে ম্যাচটি হয়েছিল ১৯৮৬ সালের আজকের তারিখ অর্থাৎ ১৮ এপ্রিল।

সেই ম্যাচে কোটি ভারতীয়র হৃদয় চূর্ণ-বিচূর্ণ করে পাকিস্তানকে শিরোপা এনে দিয়েছিলেন কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান জাভেদ মিঁয়াদাদ। আর ছক্কা হজম করা বোলার ছিলেন ডানহাতি পেসার চেতন শর্মা।

শারজাহতে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমেছিল ভারত। হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন শুরুর তিন ব্যাটসম্যানই। কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত ৭৫, সুনিল গাভাস্কার ৯২ ও দিলিপ ভেংসরকার ৫০ রান করলে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ২৪৫ রানে থামে ভারতের ইনিংস।

Advertisement

২৪৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি পাকিস্তানের। মাত্র ৬১ রানেই সাজঘরে ফিরে যান মুদাসসার নাজার (৫), মহসিন খান (৩৬) ও রমিজ রাজা (১০)। দলের বিপদে একাই হাল ধরেন মিয়াদাদ। ছোট ছোট জুটি গড়ে এগিয়ে যান লক্ষ্যের পথে।

সেলিম মালিক ২১ ও আব্দুল কাদির ৩৪ রান করে আউট হলে ১৮১ রানে পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটে। এরপর আবার নিচের সারির ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা। কিছুই করতে পারেননি মঞ্জুর এলাহি, ইমরান খান, ওয়াসিম আকরামরা।

তবে অপরাজিত ছিলেন মিঁয়াদাদ। শেষপর্যন্ত চেতন শর্মার করা শেষ ওভারের শেষ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৪ রান। উইকেট হাতে ছিল মাত্র একটিই। মিঁয়াদাদ তখন অপরাজিত ১১৩ বলে ১১২ রান নিয়ে। এমতাবস্থায় ইয়র্কার করার চেষ্টা করেছিলেন চেতন।

কিন্তু সেটি খানিক ভুলে হয়ে যায় লো ফুলটস। এমন সুযোগ ছাড়েননি মিঁয়াদাদ। সোজা মিডউইকেট দিয়ে পাঠিয়ে দেন সীমানার ওপারে। বল বাউন্ডারি পার হওয়ার আগেই বুঝে গিয়েছিলেন মিঁয়াদাদ, ফলে শট করেই শুরু করে দেন উদযাপন। পাকিস্তান পায় ১ উইকেটের অবিস্মরণীয় জয়, জিতে নেয় অস্ট্রেলেশিয়া কাপের শিরোপা।

Advertisement

ম্যাচের পর মিঁয়াদাদ বলেছিলেন, ‘ভারতের খেলোয়াড়রা সবাই একত্র হয়ে পরিকল্পনা সাজাচ্ছিল। পুরো লড়াই তখন এক বলে ৪ রানে নেমে এসেছিল। আমিও আমার নিজের পরিকল্পনায় অটল ছিলাম। জানতাম চেতন এখানে ইয়র্কার করবে। তাই আমি ক্রিজ থেকে বেরিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। আমার পরিকল্পনা কাজে লেগে গেল। জায়গা করে নিজের সব সামর্থ্য দিয়ে মেরে দিলাম।’

এসএএস/এমএস