আন্তর্জাতিক

করোনাভাইরাস: লকডাউনের মধ্যে ভারতে বিশাল হিন্দু জমায়েত

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে যখন সারা দেশেই লকডাউন চলছে এবং সব ধরণের ধর্মীয় ও সামাজিক জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তার মধ্যেই কর্ণাটক রাজ্যে একটি হিন্দু উৎসবে কয়েকশ' মানুষ জড়ো হয়েছিলেন।

Advertisement

কর্ণাটকের কালবুর্গি জেলার একটি মন্দিরে বাৎসরিক রথযাত্রা উৎসব ছিল বুধবার। সেদিন যদিও শুধুমাত্র পুরোহিত এবং মন্দিরের ট্রাস্টিদের উপস্থিতিতেই ধর্মীয় রীতি মেনে পূজা হয়।

তবে বৃহস্পতিবার সকালে রথটিকে মন্দির চত্বর থেকে বাইরে আনা হতেই শত শত মানুষ সেটি ছোঁয়ার জন্য হাজির হয়ে যান বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে। বহু মানুষ জড়ো হলেও জমায়েতটি হাজার ছাড়ায়নি বলেই প্রশাসন বিবিসিকে জানিয়েছে।

হিন্দু মন্দিরটিতে বড়সড় জমায়েতের এই ঘটনা ঘটল এমন সময়ে, যখন দেশ-বিদেশের দেড় হাজার মুসলমানের দিল্লিতে তাবলিগ জামাতের সভায় যোগ দেয়া নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক চলছে। ওই কালবুর্গি জেলাই ভারতের প্রথম জেলা, যেটিকে করোনা হটস্পট বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল। ওই জেলার যেখানেই করোনা সংক্রমিতের খোঁজ পাওয়া গেছে, সেই গোটা এলাকাই সিল বা অবরুদ্ধ করে দেয়া হচ্ছে।

Advertisement

এ ঘটনার পর রেউড় নামের ওই গ্রামটিকেও অবরুদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। ওই গ্রাম থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে ওয়াডী নামের আরেকটি গ্রামে করোনা সংক্রমণ দেখা দেয়ায় সেটিকে অবরুদ্ধ করা হয়েছে আগেই।

জেলার ডেপুটি কমিশনার শারদ বি জানিয়েছেন, ওই এলাকায় চিকিৎসকদের দল পাঠাচ্ছি আমরা। তারা বাড়ি বাড়ি ঘুরে দেখবে যে কারও জ্বর এসেছে কি না। এক পুলিশ কর্মকর্তা ও এবং ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটকে কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে সাসপেন্ড করেছে সরকার।

কালবুর্গির পুলিশ সুপারিন্টেডেন্ট মার্টিন মারবানিয়াং বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করার অভিযোগে মন্দির কমিটি এবং ১৯ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মার্চের মাঝামাঝি দেশ-বিদেশের দেড় হাজার মুসলমানের দিল্লিতে তাবলিগ জামাতে যোগ দেয়া নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক এখনও অব্যাহত রয়েছে। দিল্লির জমায়েতে অংশ নেয়া অনেকেই নিজের রাজ্যে ফিরে গিয়ে করোনা সংক্রমিত বলে শনাক্ত হয়েছেন এবং অনেকের মৃত্যুও হয়েছে। ওই ঘটনা নিয়ে ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর একাংশ এবং তাদের সমর্থকরা তাবলিগ জামাতের ওপরই ব্যাপক সংক্রমণ ছড়ানোর দায় চাপাচ্ছেন।

Advertisement

ইতোমধ্যে তাবলিগ জামাতের প্রধান মাওলানা সাদ কান্দলভির বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগ দায়ের হয়েছে এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট মানি লন্ডারিং বা অর্থ পাচারের অভিযোগে পৃথক তদন্ত শুরু করেছে তার বিরুদ্ধে। বিবিসি বাংলা।

এসআইএস/পিআর