১৯৪৭ সালে প্রায় দেড় কোটি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করা হয় কাঁটাতারের বেড়া তুলে। ভারত থেকে মুসলমানরা পাকিস্তানে, আর পাকিস্তান থেকে হিন্দুরা ভারতে আসতে থাকে। ম্যাপে পেন্সিলের দাগ টেনে নানা মত ও সংস্কৃতির ভারত উপমহাদেশকে ভাগ করে পঙ্গু করে দেয়া হয়।
Advertisement
এক সময় হয়তো মইনুদ্দিন চাচার দোকানে বসে হয়তো চা-বিস্কুটের আসর জমাতেন পরিমল কাকা- শ্যামল কাকা; তাদের আস্তানা আজ দুটি আলাদা দেশ। কিন্তু এভাবে কি বাংলাকে বিচ্ছিন্ন করা যায়, সেই মানুষগুলোকে কি আলাদা করা গেছে?
এরকম ভাবনা থেকেই মাহিরী বসু লিখলেন একটি গান ‘আমরা যে এক বাংলা ভাষায়’। বাঁধলেন সুর। এই গান এপার বাংলা (পশ্চিমবঙ্গ) ও ওপার বাংলার (বাংলাদেশ) প্রকৃতি, অনুভব ও ভাষার সম্প্রীতি চেতনার কথা বলে। সেখানে সীমান্তরেখা বা ভৌগোলিক বিভাজন মিথ্যো হয়ে যায়।
এই গানে একসঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন দুই বাংলার খ্যাতনামা শিল্পীরা। এ বছর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শতবর্ষ। গানটি তার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তাকে উৎসর্গ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম প্রবাদ প্রতিম নেতৃত্ব নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে উৎসর্গ করা হয়েছে গানটি।
Advertisement
ভারত থেকে এই গানে অংশগ্রহণ করেন শুভমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়তী চক্রবর্তী, ইমন চক্রবর্তী, মালবিকা সেন, শম্পা কুণ্ডু, শ্রীকান্ত আচার্য, মনোময় ভট্টাচার্য, সৌম্য বসু, রহেন বসু এবং মাহিরী বসু স্বয়ং। বাংলাদেশের শিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন- রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, বাপ্পা মজুমদার, অবন্তী সিঁথি, পৃথ্বীরাজ, প্রিয়ঙ্কা গোপে, গাজী শার্মীন আহমেদ, শাওজীব আলাম তানভির, ঋতুরাজ।
ছোটবেলা থেকেই গানের পরিবেশে বড় হয়েছেন মাহিরী। বাবা আচার্য জয়ন্ত বসুর সান্নিধ্য তাকে সমৃদ্ধ করেছে। সম্পূর্ণ প্রকল্পটি রোহেন-মাহিরী ক্ল্যাসিকাল ফিউশন ব্যান্ডের। রোহেন বসু পণ্ডিত দেবজ্যোতি বসুর ছেলে।
গেল ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে গানটি। গানের মাধ্যমে ১৯৫২ সালের ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।
এমএসএইচ/এমএস
Advertisement