১৯৯২ সালে চীনে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রান্তিক হিসাব শুরুর পর থেকে ইতিহাসে প্রথমবার দেশটিতে এর হার কমেছে। করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপে এ বছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে চীনের জিডিপি কমে গেছে অন্তত ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।
Advertisement
গত বছরের শেষদিন চীনের উহানে প্রথমবার শনাক্ত হয় নভেল করোনাভাইরাস। এর পরপরই দেশটিতে বন্ধ করে দেয়া হয় ব্যবসা-বাণিজ্য, কল-কারখানা, যান চলাচল। তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে ঘরবন্দি চীনারা। ফলে রীতিমতো ধস নেমেছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে।
শুক্রবার চীনের ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকসের (এনবিএস) প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, বছরের প্রথমভাগে বিশেষজ্ঞদের অনুমানের চেয়েও বড় ধস নেমেছে দেশটির অর্থনীতিতে। সম্প্রতি রয়টার্সের এক জরিপে এই প্রান্তিকে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন বিশ্লেষকেরা। ব্লুমবার্গ জানিয়েছিল, দেশটিতে জিডিপি হ্রাসের হার হতে পারে ৬ শতাংশ।
এনবিএসের তথ্যে দেখা যায়, ২০২০ সালের প্রথম দুই মাসে বিশাল ধসের পর মার্চেও প্রচণ্ড চাপে ছিল চীনের অর্থনীতি। খনি খনন, শিল্প উৎপাদন, পণ্য প্রস্তুতকরণ প্রভৃতির হার জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে কমেছে ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ। আর মার্চে কমেছিল অন্তত ১১ দশমিক ১ শতাংশ।
Advertisement
করোনা সংক্রমণের কারণে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জনসংখ্যার দেশটিতে প্রথম প্রান্তিকে খুচরা বিক্রি কমে গেছে ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ। সেখানে প্রথম দুই মাসেই এটি হ্রাসের হার ছিল ২০ দশমিক ৫ শতাংশ।
এছাড়া, মহামারির কারণে বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনে বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। অবশ্য প্রথম দুই মাসেই এর হার পৌঁছেছিল ৬ দশমিক ২ শতাংশ। যদিও এটি দেশটিতে বেকারত্বের হার বৃদ্ধির প্রকৃত সংখ্যা নয়। কারণ, এর মধ্যে চাকরি হারানো অভিবাসী কর্মীদের হিসাব করেনি তারা। এ ধরনের অনেক কর্মীই এখনও নিষেধাজ্ঞার কারণে কাজে ফিরতে পারছেন না।
করোনার বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আসায় ধীরে ধীরে সচল হতে শুরু করেছে চীনের অর্থনীতির চাকা। সম্প্রতি উহানে তুলে নেয়া হয়েছে লকডাউন। কাজে ফিরতে শুরু করেছেন কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। তারপরও খুব শিগগিরই দেশটির অর্থনীতি পুরনো গতি ফিরে পাবে না বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।
সূত্র: রয়টার্স, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
Advertisement
কেএএ/এমএস