দেশজুড়ে

এক রাস্তায় ৫০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ

তিনশো গজ রাস্তা পাকা না হওয়ায় নড়াইল ও লোহাগড়া উপজেলার ১১ গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ১৩ বছর ধরে এ অবস্থা বিরাজ করলেও সড়কটি পাঁকা করার কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এ কারণে ওই এলাকার মানুষকে ছয় কিলোমিটার পথ ঘুরে জেলা ও উপজেলা সদরে আসতে হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমের প্রায় ছয় মাস এ সড়কে চলাচল বন্ধ থাকে। এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল এবং লোহাগড়া উপজেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে ২০০২ সালের ৩০ জুন হাজরাখালি খারের ওপর স্লুইস গেটসহ ছোট একটি সেতু নির্মাণ করা হয়।সরেজমিন দেখা গেছে, হাজরা খালের ওপর নির্মিত সেতুর দুই পাশই কাঁচা। নির্মাণের ১৩ বছরেও দুই পাশের সংযোগস্থলের প্রায় ৩শ গজ রাস্তা পাকা করা হয়নি। এর মধ্যে সদর উপজেলা অংশে প্রায় ২শ গজ ও লোহাগড়া উপজেলা অংশে ১শ গজ রাস্তা কাঁচা রয়েছে। এ কারণে দুই উপজেলার ১১ গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে অতিরিক্ত ছয় কিলোমিটার পথ ঘুরে উপজেলা সদরের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ হাট-বাজার যাতায়াত করতে হয়। অথচ এই এলাকায় আমাদা আদর্শ কলেজ, এবিএনকে আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়, কেটিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কামালপ্রতাপ এসজে ইনস্টিটিউশন, টাবরা নবকৃষ্ণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আমাদা দাখিল মাদ্রাসাসহ, চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুটি মাদ্রাসা রয়েছে। এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-অভিভাবকসহ শিক্ষার্থীরা এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন।নড়াইল সদর উপজেলার চরশালিখা গ্রামের কলেজ ছাত্র সাজ্জাদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এ রাস্তাটুকু কাঁচা থাকায় সদর উপজেলার টাবরা, শালিখা, চরশালিখা, কামালপ্রতাপ আমাদা, বয়রা এবং লোহাগড়া উপজেলার উলা, সারোল, নোয়াগ্রাম, কুমড়ি, তালবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।আমাদা আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ আল ফয়সাল খান জাগো নিউজকে বলেন, হাজরাখালী খাল নড়াইল ও লোহাগড়া উপজেলাকে বিভক্ত করেছে। এই খালের ওপর ১৩ বছর আগে একটি সেতু নির্মিত হলেও সেতুর দুই পাশের প্রায় ৩শ গজ রাস্তা পাঁকা করা হয়নি। ফলে খালের দুই পাড়ের ১১টি গ্রামে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে ওই রাস্তাটুকু পার হতে স্কুল-কলেজের ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের কষ্টের সীমা থাকে না। যে কারণে শিক্ষার্থীদের প্রায় ছয় কিলোমিটার ঘুরে কলেজে আসতে হচ্ছে।আমাদা আদর্শ কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আফরোজা মৌসুমী জাগো নিউজকে বলেন, বর্ষার সময় চলতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যেতে হয়। তখন বই-খাতা কাদার মধ্যে পড়ে যায়। পোশাক নষ্ট হয়। পপি, তাসলিমা, শাকিলা, লতিফা ও আরজু জাগো নিউজকে জানান, স্যান্ডেল, জুতা খুলে পথ চলতে হয়। কলেজে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। লোহাগড়া উপজেলার নোয়াগ্রামের গ্রামের মহাসিন শেখ জাগো নিউজকে বলেন, এই রাস্তা দিয়ে দিঘলিয়া, মহাজন, শালিখা, আমাদাসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে যেতে হয়। কিন্তু রাস্তা কাঁচা থাকায় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য যানবাহনে করে নিতে পারে না। তিনি বলেন, আশ্বিন মাসের শেষ পর্যন্ত এই অংশের কাদা শুকায় না। জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোতালেব বিশ্বাস জাগো নিউজকে বলেন, হাজরাখালি খালের দুই পাশের প্রায় ৩শ গজ রাস্তা কাঁচা রয়েছে। যে কারণে দুই উপজেলার মানুষের চলাচলের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত চেষ্টা করা হবে।হাফিজুল নিলু/এমজেড/আরআইপি

Advertisement