বিশ্বব্যাপী চলমান করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি মোকাবিলার অংশ হিসেবে প্রতিবেশী দেশ মালদ্বীপের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ দেশটিতে পাঠানো হচ্ছে প্রয়োজনীয় জরুরি ওষুধ, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা সামগ্রী পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস, জীবাণুনাশক হ্যান্ড স্যানিটাইজার ইত্যাদি।
Advertisement
এরই মধ্যে এ সব সহায়তা পণ্য পৌঁছে দিতে মালদ্বীপের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে নৌবাহিনী জাহাজ ‘সমুদ্র অভিযান’। বুধবার (১৫ এপ্রিল)) দুপুরে জাহাজটি এ সকল সামগ্রী নিয়ে মালদ্বীপের রাজধানী মালের উদ্দেশে চট্টগ্রাম নৌ জেটি ত্যাগ করে। এ সময় কমান্ডার বিএনফ্লিট রিয়ার অ্যাডমিরাল এম মাহবুব-উল-ইসলামসহ চট্টগ্রাম নৌঅঞ্চলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে জাহাজটিকে বিদায় জানান।
নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সব তথ্য জানানো হয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার বরাবরই প্রতিবেশী দেশের যেকোনো প্রয়োজনে এগিয়ে এসেছে। এই ধারাবাহিতায় বিশ্বব্যাপী সংক্রমিত করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে বন্ধুপ্রতিম মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম মোহাম্মদ সলিহর কাছে এ সকল জরুরি ওষুধ, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা সামগ্রী প্রেরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ সকল সামগ্রী সংগ্রহ করে নৌবাহিনী জাহাজের মাধ্যমে দেশটিতে পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
Advertisement
বলা হয়, এ সকল সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ২০ হাজার পিস পিপিই সেট, ৫ হাজার হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ৯৬০ পিস নিরাপত্তা চশমা ও ৪০ কার্টুন জরুরি ওষুধ। পাশাপাশি প্রায় ৮৫ টন খাদ্য সামগ্রীও পাঠানো হচ্ছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ সহায়তা দেশটিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, জাহাজটি আগামী ২০ এপ্রিল মালদ্বীপে পৌঁছানোর পর দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়ার অ্যাডমিরাল নাজমুল হাসানের উপস্থিতিতে জাহাজের অধিনায়ক কমান্ডার এ এফ এম আহসান উদ্দিন মালদ্বীপ সরকারের প্রতিনিধি দলের কাছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সকল সামগ্রী হস্তান্তর করবেন। জরুরি এ সহায়তা শেষে জাহাজটি আগামী ৩০ এপ্রিল দেশে ফিরবে।
উল্লেখ্য, বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দেশ মালদ্বীপের জরুরি প্রয়োজনে এর আগেও বাংলাদেশ এগিয়ে এসেছিল। গত ২০০৪ সালে মালদ্বীপে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ সুনামিতে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় এবং ২০১৪ সালে দেশটির ডিস্যালাইনেশন প্লান্টে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পানি সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। সে সময় বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনায় নৌবাহিনী জাহাজের মাধ্যমে দেশটিতে জরুরি খাদ্য সহায়তা এবং বিশুদ্ধ খাবার পানি পৌঁছে দেয়া হয়েছিল। বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে এ ধরনের সহযোগিতা দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আর ও সুদৃঢ় করবে।
এফআর/এমকেএইচ
Advertisement