আন্তর্জাতিক

লকডাউনের জেরে টানা ২১ দিন গাড়িতে বসবাস ২ ব্যবসায়ীর

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। বের হওয়ার মতো অবস্থা নেই। তাইতো টানা ২১ দিন গাড়িতে থেকে সচেতনতার নজির গড়লেন রাজকোটের দুই ব্যবসায়ী। লকডাউন শুরুর আগে গুজরাটের সুপারির বাজারে গিয়ে আটকে পড়েছিলেন এই দুই ব্যবসায়ী। এরপর লকডাউনের ইতিহাস সকলেরই জানা।

Advertisement

কিন্তু দুই ব্যবসায়ীর আস্তানা হয়ে ওঠে তাদের গাড়ি। জায়গা না পেয়ে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে এই আতঙ্কে গাড়িতেই থাকতে শুরু করেছেন দু’জনে।

লকডাউনের ঘোষণা দিয়েই ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘যে যেখানে আছেন সেখানেই থেকে যান’।

তাই গুজরাটের সুপারি বাজারে এসে কোথাও জায়গা না পেয়ে গাড়িতেই থাকতে শুরু করেছেন দক্ষিণা কানাড়া জেলার পুট্টুরের দুই ব্যবসায়ী। গাড়িই ঘর, গাড়িতেই বিছানা, গাড়িতেই কাটছে দিন-রাত্রি। প্রয়োজনে ব্যবহার করছেন স্থানীয় একটি রেস্তরাঁর শৌচাগার। কিন্তু এভাবে আর কতদিন থাকা সম্ভব? কারণ ভারতে লকডাউন বাড়ানো হয়েছে ৩ মে পর্যন্ত। অর্থাৎ আরও ১৯ দিন বাকি। সারাদিন গাড়িতে থাকলেও রান্না করে খাওয়ার রসদ ফুরিয়ে আসছে তাদের কাছে। এভাবে দিন কাটানো অসহনীয় হয়ে উঠছে তাদের জন্য। তাই স্থানীয় প্রশাসনের কাছে তারা আর্জি জানিয়েছেন, যেভাবে হোক বাড়ি ফিরিয়ে দিতে হবে।

Advertisement

তাদের এই দুর্দশার খবর পেয়েই জেলার কমিশনার ভালসাদে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। শুধু থাকার জায়গাই নয়, বিনামূল্যে তারা যেন খাবার পান সেদিকেও নজর রাখার কথা জানিয়েছেন। তবে ভালসাদে এখনও পর্যন্ত করোনার প্রকোপ না পড়ায় কিছুটা নিশ্চিন্ত হতে পেরেছেন এই দুই ব্যবসায়ী।

জানা যায়, দুই ব্যবসায়ী আশিক হুসেন ও মহম্মদ থাকিন ২০ মার্চ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু গুজরাটের সুপারি বাজারে পৌঁছনোর আগেই তাদের আটকে দেয়া হয় ২১ মার্চ। এরপর লকডাউন জারি হলে তারা বাড়িও ফিরে আসতে পারেননি।

অন্যদিকে লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি হওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে এই দুই ব্যবসায়ীর। হুসেনের কথায়, ‘স্থানীয় এক সমাজসেবী সংস্থার কর্ণধার কাসাফ সায়েদ, প্রতিদিন খাবার আর ওষুধপত্র দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা এলাকায় কোনো লজ খুঁজে পায়নি। ফলে এতদিন গাড়ির ভেতরই ঘুমাচ্ছি। স্থানীয় এক হোটেলের শৌচালয় ব্যবহার করার অনুমতি পেয়েছি। অনেক মানুষের কাছেই সাহায্য চেয়ে আর্জি জানিয়েছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। বাড়ি ফিরিয়ে দেয়ার জন্যও কেউ এগিয়ে আসেনি। এখন শুধু প্রশাসনই ভরসা তারা অনুমতি দিলে বাড়ি ফিরতে পারব।’

এফআর/পিআর

Advertisement