জাতীয়

বেতন-ভাতার দাবি : চার স্থানে পোশাকশ্রমিকদের অবরোধ-বিক্ষোভ

করোনার ভয়াল থাবায় প্রতিদিনই নতুন নতুন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই। বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অন্যান্য জেলার সঙ্গে কার্যত বিচ্ছিন্ন ঢাকা। কিন্তু অঘোষিত লকডাইনের মধ্যেই সামাজিক দূরত্বের বাধ্যবাধতা না মেনেই সড়কে নেমেছেন পোশাকশ্রমিকরা।

Advertisement

বুধবার (১৫ এপ্রিল) সকাল থেকেই রাজধানীর বাড্ডা, মিরপুর, ভাষানটেক ও উত্তরার দক্ষিণখানে ১০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানের পোশাকশ্রমিকরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। এরমধ্যে বাড্ডার শ্রমিকরা বেতন-ভাতা পরিশোধে কাউন্সিলরের আশ্বাসে অবরোধ তুলে চলে গেলেও রয়ে গেছে বাকি স্থানে আন্দোলনরত শ্রমিকরা।

বুধবার সকাল ১০টার দিকে ভাষানটেক থানার কাফরুল এলাকার মিনি সুপার মার্কেটের পাশে চিটাগাং ফ্যাশন নামে একটি গার্মেন্টের শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধ করেন। এক মাসের বেতন ও দুই মাসের ওভারটাইমের বকেটা পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন তারা।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে কাফরুল ও ভাষানটেক থানা পুলিশ। পুলিশের আশ্বাসে এর আগেও রাস্তায় নেমে ফিরে গেলেও এবার শ্রমিকদের দাবি, বেতন-ওভারটাইমের বকেটা মিটিয়ে নিয়েই তারা ফিরবেন।

Advertisement

ফারুক নামে চিটাগাং ফ্যাশন এক শ্রমিক জানান, করোনার কারণে গার্মেন্টস বন্ধ। কিন্তু তার আগের বেতন ও ওভারটাইমের বকেয়া মেটায়নি গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ। করোনার লকডাউনে বেতন-ভাতা বকেয়া থাকায় রাজধানীতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে কাফরুল থানার ওসি সেলিমুজ্জামান জানান, চিটাগাং ফ্যাশন গার্মেন্টসটি ভাষানটেক থানায় পড়েছে। তবে শ্রমিকদের আন্দোলন বিক্ষোভ চলছে উভয় পাশ্বের সড়কে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বাকিটা ভাষানটেক ওসিই বলতে পারবেন।

ভাষানটেক থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইসরাঈল হোসেন বলেন, ‘চিটাগাং ফ্যাশনস গার্মেন্টসের মালিক শ্রীলংকার নাগরিক। তার পক্ষ থেকে জিএম জাহিদ সাহেব এসেছেন শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলতে। আমরা পরিস্থিতি অবজারভ করছি। বিজিএমইএকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’

অন্যদিকে বেতন-ভাতা দাবিতে মিরপুর থানার দারুসসালাম এলাকায় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারীরা সকাল সাড়ে আটটা থেকে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। কিন্তু মালিকপক্ষের কোনো সাড়া না পাওয়ায় এখনো রাস্তাতেই রয়ে গেছেন শ্রমিকরা।

Advertisement

এ ব্যাপারে মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাজিরুর রহমান বলেন, ‘আকিফ গার্মেন্টস, আরএসএফ ফ্যাশন্স, এমইসি ফ্যাশন্স, লুমিয়া প্রিন্টার্সসহ বেশ কয়েকটি ছোট ছোট গার্মেন্টস শ্রমিকরা বেতনভাতার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। পুলিশের কোনো কথাই তারা শুনছে না। আবার ছোট ছোট গার্মেন্টস হওয়ায় তাদের একজন বাদে অন্য গার্মেন্টসের মালিকদের কোনো খোঁজই মিলছে না। এ ব্যাপারে পুলিশ নয়, উদ্যোগী হওয়া উচিত বিজিএমইএকে।’

অন্যদিকে রাজধানীর দক্ষিণখান থানার উত্তরা বিমানবন্দর গোল চত্বর ও জসীম উদ্দীন এলাকার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে রেদওয়ানটেক্স অ্যান্ড অ্যাপারেলস গার্মেন্টস শ্রমিকরা। তাদেরও দাবি বকেয়া বেতনভাতা।

দক্ষিণখান থানার ওসি শিকদার মো. শামীম হোসেন জানান, মালিকপক্ষকে জানানো হলে তারা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। গার্মেন্টস মালিকপক্ষ শ্রমিকদের দাবির মুখে বকেয়া বেতনভাতা পরিশোধ করায় শ্রমিকরা সড়ক ছেড়েছে বলেও জানান তিনি।

এর আগে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বেতনভাতার দাবিতে রাজধানীর বাড্ডায় একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। তবে স্থানীয় কমিশনার মাসুম গনির আশ্বাসে তারা আন্দোলন স্থগিত করেন।

জেইউ/এসআর/জেআইএম