করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলছে লকডাউন। বাংলাদেশও লকডাউন থেকে বাদ পড়েনি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলা ছাড়াও নির্দিষ্ট অঞ্চলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে লকডাউন করা হয়েছে।
Advertisement
তবে এর মাঝে প্রশাসন থেকে লকডাউন না করা হলেও এলাকাবাসীর উদ্যোগে শুরু হয়েছে ব্যতিক্রমী লকডাউন। সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরার নির্দেশনা দিলেও এভাবে বিভিন্ন এলাকাকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার উদ্যোগ নেয়া হয় বিভিন্ন স্থানে।
ফরিদপুর জেলা শহরের বিভিন্ন পাড়ামহল্লা ছাড়াও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন গ্রামে এভাবে মূল সড়কের সঙ্গে সংযোগ সড়কগুলোতে বাঁশের খুঁটি কিংবা গাছের গুঁড়ি দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে ওই এলাকার সঙ্গে বাইরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
এ ব্যাপারে কথা হয় শহরের ওয়্যারলেসপাড়া মহল্লার বাসিন্দা পৌর কমিশনার সাবুল চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, দিন যতই যাচ্ছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি ততই বাড়ছে। ইতোমধ্যে ফরিদপুরে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে অনেকেই এসেছেন। যারা এসব করোনাভাইরাস বহন করছেন বলে পরীক্ষায় ধরা পড়েছে। তাই আমরা ঝুঁকি নিতে রাজি নই। এজন্য আমাদের মহল্লায় প্রবেশপথে কেউ গাড়ি বা অন্য যানবাহনে চড়ে প্রবেশ করতে যাতে না পারে সেজন্য এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
Advertisement
শহরের হরিসভা মহল্লার স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার মামুনুর রহমান মামুন বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ওয়ার্ড ও ইউনিয়নভিত্তিক কমিটি করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে এলাকাভিত্তিক গঠিত কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বাইরে থেকে আগতদের নিয়েই আমরা বেশি উদ্বিগ্ন। যেহেতু এলাকায় কেউ সংক্রমিত হয়নি তাই সতর্কতামূলক আমাদের এই উদ্যোগ।
সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের সিঅ্যান্ডবি ঘাটস্থ বিহারি কলোনির বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেন মিয়া বলেন, এখানকার অনেকেই ঢাকা ও মুন্সিগঞ্জে চাকরি করেন। অনেকের আত্মীয়-স্বজন রয়েছেন সেখানে। এই সময়ে তাদের কেউ যাতে আত্মীয়ের বাড়ি বা নিজ বাড়িতে না আসেন সেজন্য এই লকডাউন।
শহরের গোয়ালচামট মোল্লাবাড়ি সড়কের মিজানুর রহমান মিঠু বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার বিনা প্রয়োজনে কাউকে রাস্তায় নামতে নিষেধ করেছে। এমনকি এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় চলাচলেও বিধি-নিষেধের কথা বলা হয়েছে। এ অবস্থায় অন্য এলাকার মানুষ যেন সহজেই এখানে ঢুকে পড়তে না পরেন সেজন্য এলাকার প্রবেশপথ এভাবে আটকে দেয়া হয়েছে।
ফরিদপুর শহর ছাড়াও বিভিন্ন গ্রামে এখন এভাবে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে সাধারণ চলাচলের জন্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, অ্যাম্বুলেন্স কিংবা পুলিশের টহল ছাড়াও জরুরি প্রয়োজনে এসব তুলে দেয়া হয়।
Advertisement
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামান বলেন, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের নানা উদ্যোগের পাশাপাশি শহর থেকে শুরু করে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে করোনা প্রতিরোধ কমিটি করা হয়েছে। মানুষকে ঘরে রাখার জন্য করোনা প্রতিরোধ কমিটিকে সঙ্গে নিয়ে যদি এমন লকডাউনের উদ্যোগ নেয়া হয়, তবে সেটিকে সাধুবাদ জানাই। এক্ষেত্রে অবশ্যই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মনীতি ও সরকারের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
বি কে সিকদার সজল/এএম/এমআরএম