করোনাভাইরাসের কারণে বাজে পরিস্থিতি তৈরি না হলে টোকিওজুড়ে এখন থাকতো উৎসবের আমেজ। কারণ, আর কিছুদিন পরই যে সেখানে শুরু হওয়ার কথা ছিল, ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ অলিম্পিম গেমসের। কিন্তু করোনার কারণে সারবিশ্বে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ১ বছর পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে জাপান সরকার এবং ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটি (আইওসি)।
Advertisement
তবে অলিম্পিক ভিন্ন কোনোভাবে হলেও আয়োজন করা সম্ভব ছিল কি না, তা নিয়ে চলছে জোর কানাঘুষা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আয়োজকরা বলছেন, তাদের ভিন্ন কোনো পরিকল্পনাই ছিল না, যেটা দিয়ে ভিন্নভাবে অলিম্পিক আয়োজন করা যায়। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে, অলিম্পিক পিছিয়ে দেয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না তাদের সামনে।
টোকিও অলিম্পিকের মুখপাত্র মাসা তাকায়া বলেন, ‘আয়োজনরা নির্দিষ্ট তারিখ, ২৪ জুলাইকে সামনে রেখেই তাদের সব প্রস্তুতি চালিয়ে নিতে শুরু করে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে এক বছর পিছিয়ে দিতে বাধ্য হই আমরা। এখন আমরা ২০২১ সালের ২৩ জুলাইকে সামনে রেখেই সমস্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করতে যাচ্ছি। প্যারালম্পিক্স শুরু হবে এরপর ২৪ আগস্ট থেকে।’
এই দুটি তারিখই ঘোষণা করা হয় গত মাসের শেষ দিকে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি এবং টোকিও অলিম্পিক গেমস আয়োজকদের পক্ষ থেকে। এই তারিখ ঘোষণাই নিশ্চিত করে দেয়, চলতি বছর আর এই গেমসটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে না।
Advertisement
সাংবাদিকদের সঙ্গে টেলিকনফারন্সে তাকায় বলেন, ‘আমরা এখন নতুন লক্ষ্য নিয়ে সামনে এগুচ্ছি। আমাদের সামনে ভিন্ন কোনো প্ল্যান নেই।’
জাপানি সাংবাদিকরা জানতে চান, করোনাভাইরাস যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে করে আর মাত্র ১৫ মাস পর অলিম্পিক আয়োজন করা সম্ভব কি না। জবাবে তাকায়া বলেন, ‘আপনাদের আমরা জানিয়ে দিতে চাই যে, অলিম্পিক এবং প্যারালম্পিক্সের জন্য যেহেতু নতুন তারিখ ঘোষণা হয়েছে, আমরা আপাতত এর বাইরে চিন্তা করছি না। এটাকে সামনে রেখেই টোকিও এবং এর সঙ্গে জড়িত সব পক্ষই আগামী বছর সেরা একটি গেমস উপহার দেয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।’
তবে, আগামীবছরও অলিম্পিক আয়োজন সম্ভব কি না তার সরাসরি কোনো উত্তর দেননি তাকায়া। বরং জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ওপর বিষয়টা ছেড়ে দিয়ে বলেন, ‘আগামী বছরও স্থগিতের বিষয়ে আর কোনো চিন্তা-ভাবনাই এখন হয়তো আর নেই।’
অলিম্পিকে অংশ নেয়ার কথা ১১ হাজার অ্যাথলেটের। প্যারালম্পিক্সে অংশ নেবে ৪ হাজার ৪০০ অ্যাথলেট। সঙ্গে ২০৬টা সদস্য দেশের বিশাল সাপোর্ট স্টাফ। সে সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে ভ্রমণ যেভাবে স্থবির হয়ে গেছে, সে সম্পর্কে, নতুন করে হোটেল বুকিং দেয়া, সমর্থকদের স্টেডিয়ামে আসা-যাওয়া, ভেন্যু নিশ্চিত করণ, পূণরায় সূচি তৈরির কারণে ২০০ কোটি থেকে ৬০০ কাটি ডলার অতিরিক্ত প্রয়োজন হচ্ছে- এসবের কোনো সঠিক জবাব আসেনি অলিম্পিক আয়োজক কমিটির কথা থেকে।
Advertisement
তবে কয়েকদিন আগেই টোকিও অলিম্পিক আয়োজক কমিটির প্রধান তোসিরো মোতো শঙ্কা প্রকাশ করেন, করোনার বিস্তার যেভাবে হচ্ছে, তাতে আগামী বছরও অলিম্পিক আয়োজন করা যাবে কি না সন্দেহ।
আইএইচএস/