করোনা চিকিৎসায় ছয়টি বিশেষায়িত হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকা-খাওয়ার জন্য অভিজাত হোটেল বরাদ্দ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
Advertisement
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনি যেসব উদ্যোগ নিয়েছেন, মানুষকে করানোভাইরাসের মহামারি থেকে বাঁচাতে তা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বিশেষ করে ডাক্তারদের সুবিধার জন্য হোটেল বরাদ্দ দেয়ার যে ঘোষণা দিয়েছেন তা দেখে আপনার প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আরও বেড়ে গেছে। আমি মনে করি, আপনার মতো একজন নেত্রীকে মানা অবশ্যই সঠিক। আপনার মতো একজন নেত্রীর কর্মী হিসেবে আমি গর্ববোধ করি।’
মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) ব্যারিস্টার সুমনের নিজের ফেসবুক থেকে লাইভে এসে এ ধন্যবাদ জানান।
করোনা পরিস্থিতিতে আপদকালীন সময়ের জন্য রাজধানীর ফাইভ স্টার, থ্রি স্টার হোটেলগুলোতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সোমবার (১৩ এপ্রিল) লাইভে এসে আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। সেই আহ্বানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাড়া দিয়েছেন বলে মনে করেন এই আইনজীবী।
Advertisement
ভিডিওটি প্রধানমন্ত্রীকে উৎসর্গ করে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি যে কাজটি করেছেন আমাদের ডাক্তার নার্স যারা কাজ করেছেন, তাদের থাকার হোটেলের ব্যবস্থা করেছেন। আজকে চিঠিটা দেখে নেত্রী আমার মনে হয়েছে, আমি এমন এক নেত্রীর আদর্শের রাজনীতি করি, যে তাকে মানার মতো যোগ্যতা রাখেন উনি। আপনি ৬টা হাসপাতালে রোগী দেখেন, সেই ডাক্তারদের জন্য নার্সদের জন্য ২০টি হোটেলে আপনি রুমের বরাদ্দ করেছেন। সেজন্য কৃতজ্ঞ। যা যা করার ছিল সবই করেছেন।’
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দেশে সুমন বলেন, ‘এখন কীভাবে প্রধানমন্ত্রীর মুখ রক্ষা করবেন সেটা দেখবেন। এখন আপনাদের (চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী) কোর্টে বল চলে গেল। এই যুদ্ধ দেশ বাঁচানোর যুদ্ধ, অর্থনীতি বাঁচানোর যুদ্ধ।’
সুপ্রিম কোর্টের এ আইনজীবী ডাক্তার, নার্স ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর যা যা করার ছিল, তিনি তা তা করেছেন। এখন আমাদের উচিত হবে এই করোনা মহামারির যুদ্ধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা দিয়ে জয়ী হওয়ার চেষ্টা করা। এ যুদ্ধ হবে সাধারণ মানুষকে বাঁচানোর যুদ্ধ।’
তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি যেভাবে আপনার পরিবার পরিজন হারিয়েও বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে এবং এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বাড়াতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন, তা ইতিহাসের অনন্য দৃষ্টান্ত। আপনার তুলনা কারও সঙ্গে চলে না। বিশ্বের যে দেশগুলো সম্পর্কে বলা হয়, সেসব দেশে প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্ট মানুষের জন্য অনেক কিছু করেন তারা কেউই এত ছোট দেশ এবং এত বেশি জনগণ নিয়ে কাজ করছে না। বরং তাদের সিস্টেমটাই উন্নত হয়ে আছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ আপনি যেভাবে মানুষের উন্নতির জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন এবং মানুষকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন তার কোনো তুলনা চলে না।’
Advertisement
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘১৯৭৫ সালের পরে বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্য দিয়ে এ দেশে কলঙ্কের ইতিহাস শুরু। এরপর থেকেই এদেশের মানুষের ঈমান নষ্ট করে দেয়া হয়েছে এবং সিস্টেমটাকে নষ্ট করে দেয়ার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। সেই জায়গা থেকে দেশকে যেভাবে উন্নতির দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন আপনি তা অবশ্যই তুলনাহীন। আমরা আপনার জন্য সর্বদাই দোয়া করি এবং আপনি এ দেশের মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন।’
উল্লেখ্য, করোনা চিকিৎসায় যে সমস্ত ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়োজিত থাকবে তাদের অভিজাত হোটেলে রাখা হবে বলে মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপদে রাখতে রাজধানীর ১৯টি হোটেলে ৫৮০টি রুম ইতিমধ্যে বরাদ্দ করা হয়েছে।
ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা যেন নিরাপদে থাকে এবং তাদের যেন কোনো স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে পড়তে না হয়, সেজন্য এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানা যায়।
এই সুবিধার আওতায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, মহানগর জেনারেল হাসপাতাল এবং কমলাপুরের জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা এ সব হোটেলে থাকবেন।
এফএইচ/এফআর/পিআর