সন্ধ্যার পর ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশ মানছে না মিরপুরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। শুধু তাই নয়, সন্ধ্যা ৬টার পরও মিরপুরের বিভিন্ন এলাকার দোকানপাট খোলা রাখা হচ্ছে। বিনা কারণে বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তার মোড়ে আড্ডা দিচ্ছে সেখানকার বাসিন্দারা। সোমবার সন্ধ্যার পর মিরপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
Advertisement
মিরপুর-২, মিরপুর-১০, সনি সিনেমা হলের আশপাশসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সন্ধ্যা ৬টার পর বাসা থেকে বের না হতে সরকারিভাবে নির্দেশনা দেয়া হলেও, তা উপেক্ষা করে মিরপুরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা বাসা থেকে বের হয়ে ঘোরাফেরা করছে। অনেকে আবার দল বেঁধে প্রধান সড়কের আশপাশে আড্ডা দিচ্ছে। কেউ কেউ আবার পুলিশের আনাগোনা দেখলে সটকে পড়ছেন, পুলিশ চলে গেলে আবারও জড়ো হচ্ছে। সামাজিক দূরত্বও মানছে না তারা। তাদের অনেকের মুখে শুধু মাস্ক পরা।
মিরপুরের বিভিন্ন এলাকার অলিগলিতে সন্ধ্যার পরও দোকানপাট খোলা রাখা হচ্ছে। সেসব দোকানে মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। কোনো দোকান অর্ধেক খোলা রেখে মালামাল বিক্রি করতে দেখা গেছে।
জনতা হাউজিংয়ে সন্ধ্যার পর খোলা একটি কসমেটিকের দোকানে বসা ইব্রাহিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, কেউ বাঁধা দেয় না তাই দোকান খোলা রাখা হয়েছে। মালিক দোকান খোলা রেখে বেচাকেনা করতে বলছেন। পুলিশ দোকান বন্ধ করতে চাইলে তাকে (দোকান মালিক) ফোন দিতে বলেছেন বলে জানান তিনি।
Advertisement
সন্ধ্যায় মিরপুর জনতা হাউজিংয়ের ভেতরে দাঁড়িয়ে থাকা একদল তরুণকে আড্ডা দিতে দেখা যায়। কেন বাইরে রয়েছেন জানতে চাইলে তারা বলেন, সারাদিন বাসায় ছিলাম, বিকেলের পর অনেকে ঘরের বাইরে বের হয়ে একটু আড্ডা দিচ্ছেন।
সন্ধ্যা ৬টার পর বাসার বাইরে না আনার নির্দেশনা জানেন কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, জানি, কিন্তু সারাদিন তো আর বাসায় থাকতে ভালো লাগে না তাই বের হয়েছি। কিছুক্ষণ পরে বাড়িতে যাবেন বলে জানান।
এই এলাকায় রয়েছে দুটি পুরনো বস্তি। একটিতে ১৮৫টি ঘরে প্রায় ৭০০ মানুষ বসবাস করছেন। অন্যটিতে ১৩০টি ঘরে প্রায় ৪০০ জন মানুষের বসবাস। এসব বস্তির মানুষ দিনরাত বাইরে ঘোরাফেরা করে থাকেন। এ কারণে গভীর রাত পর্যন্ত এখানের দোকানপাট খোলা রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বস্তিবাসী।
এ এলাকার একাধিক বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিটি কর্পোরেশন ও হাউজিং বস্তিতে এক হাজারের বেশি মানুষ বসবাস করে। এদের অধিকাংশ মানুষ অসচেতনভাবে চলাফেরা করে থাকে। দিনরাত তারা ঘরের বাইরে থাকছে। এদের কারণে এ এলাকায় করোনাভাইরাস সংক্রামণের আশংকা তৈরি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন।
Advertisement
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোস্তাক আহমেদ সোমবার সন্ধ্যায় জাগো নিউজকে বলেন, সন্ধ্যার পর বাইরে থাকা মানুষগুলো পুলিশের সঙ্গে লুকোচুরি খেলে। পুলিশ গেলে সরে পড়ে, চলে গেলে আবার রাস্তায় বেরিয়ে যায়। বস্তির মানুষরা ঘরের ভেতরে রাখা যায় না, কারণে অকারণে তারা ঘরের বাইরে বের হয়ে আড্ডায় মেতে যায়।
তিনি বলেন, আমাদের পুলিশ রাস্তায় ও পাড়া-মহল্লায় দায়িত্ব পালন করছে। বিনা কারণে সন্ধ্যার পর বাসার বাহিই কাউকে পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে সন্ধ্যার পর তার এলাকায় কোনো দোকানপাট খোলা থাকার সুযোগ নেই। কেউ এমন কাজ করলে তাকে থানায় ধরে আনতে তার অধিনস্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিবেন বলেও জানান তিনি।
এমএইচএম/এমএসএইচ/জেআইএম