রাস্তার ওপর পড়ে গড়িয়ে যাচ্ছে দুধ। ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে রাস্তায় গড়িয়ে পড়া সেই দুধ একসঙ্গে ভাগাভাগি করে নিল কুকুর এবং মানুষ। এমন দৃশ্য দেখেছেন কখনও? সোমবার হৃদয়বিদারক এই দৃশ্য দেখা গেল ভারতের উত্তরপ্রদেশের লকনৌয়ে।
Advertisement
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে হঠাৎ লকডাউন ঘোষণা করায় বর্তমানে দেশটির কোটি কোটি দরিদ্র মানুষ মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তাদের সেই দুর্বিষহ জীবনের নির্মম চিত্র তুলে ধরেছে সোমবার সকালের আগ্রার একটি সড়কে কুকুর-মানুষে একসঙ্গে দুধপানের এই দৃশ্য।
দুধের একটি কন্টেইনার উল্টে যাওয়ার পর রাস্তার ওপর গড়িয়ে পড়ে। এই দুধের গড়িয়ে পড়া দেখে সেখানে ছুটে আসেন এক ভবঘুরে। রাস্তার মাঝে হাঁটু গেড়ে বসে দু-হাত ভরে দুধ তুলে একটি মাটির ছোট্ট পাত্রে রাখেন তিনি। এই ব্যক্তির মাত্র কয়েকগজ দূরে কয়েকটি কুকুরও রাস্তার সেই দুধে ভাগ বসায়। ক্ষুধা মেটাতে আশপাশে না তাকিয়ে টানা সেই দুধ পান করতে থাকে কুকুরের দল।
করোনার বিস্তাররোধে গত মাসের শেষের দিকে তিন সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার এই লকডাউন বাড়ানোর ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন তিনি। লকডাউনের ফাঁদে পড়ে দেশটির কোটি কোটি মানুষ অভূক্ত থাকছেন। হারতে বসেছেন দারিদ্রের কাছে।
Advertisement
কোনো ধরনের পূর্ব-সতর্কতা ছাড়াই ২৪ মার্চ সকালে মোদি যখন লকডাউন গোষণা দেন; তারও প্রায় এক মাস আগে ভারতে করোনার প্রথম রোগী পাওয়া যায়। আর চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে ভাইরাসটির উৎপত্তি হওয়ার প্রায় তিন মাস পর মোদির ওই ঘোষণা আসে।
লকডাউন ঘোষণার পর দেশটির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোটি কোটি অভিবাসী শ্রমিক শত শত মাইল পায়ে হেঁটেই গ্রামের বাড়িতে ফিরতে শুরু করেন। তাদের অনেকেই এখন খাবারের মারাত্মক সঙ্কটে পড়ে মানবেতর জীবন পার করছেন।
Lockdown Impact:इंसान और जानवर साथ साथ दूध पीने लगे।आज अगरा के रामबाग चौराहे पर एक दूध वाले की दूध की टंकी गिर गयी।फिर क्या हुआ खुद देखिए। pic.twitter.com/OWvNg8EFIe
— Kamal khan (@kamalkhan_NDTV) April 13, 2020গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বলছে, লকডাউনের কারণে ভারতের অনানুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় ৪০ কোটি মানুষ দারিদ্রের কড়াল গ্রাসে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
Advertisement
দেশটির সরকার ৮০ কোটি মানুষকে সরাসরি অর্থ এবং খাদ্য সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে অধিকাংশ মানুষই গত কয়েকদিন ধরে এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, তারা এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো সহায়তাই পাননি অথবা যারা পেয়েছেন সেটি খুবই সামান্য। এছাড়া এই সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে বেশ কয়েকজন বেধড়ক মারপিটের শিকার হয়েছেন।
ভারতে সোমবার করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়েছে এবং মারা গেছেন ৩০০ জনের বেশি।
এসআইএস/এমএস