সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগে চিকিৎসাধীন সুনামগঞ্জের এক প্রসূতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই নারীর স্বামী ১০ দিন আগে নারায়ণগঞ্জের গার্মেন্টস থেকে গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নে ফেরেন।
Advertisement
গতকাল (১২ এপ্রিল) রোববার ওসমানী মেডিকেল কলেজে তার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় তার শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। সন্তান জন্মের পর করোনার দুঃসংবাদ শুনলেন এই মা।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, করোনা আক্রান্ত ওই নারীর বয়স ২৫। বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায়। আক্রান্ত ওই নারীর স্বামী নারায়ণগঞ্জে একটি গার্মেন্টেসে চাকরি করেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তিনি বাড়ি চলে আসেন।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সাত্তার বলেন, ১০ দিন আগে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রামের বাড়িতে ফেরেন করোনা আক্রান্ত ওই নারীর স্বামী।
Advertisement
স্থানীয় সূত্র জানায়, অন্তঃসত্ত্বা ওই নারী ওসমানী মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগে ভর্তি ছিলেন। শুক্রবার সিজারিয়ান অপারেশনে সন্তান জন্মদানের পর ওই নারীর শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ পাওয়া যায়। তখন তার শরীরের নমুনা নিয়ে রোববার ওসমানী মেডিকেল কলেজে পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার ফলাফলে তার শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে।
সোমবার সকালে ওই নারীকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ থেকে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন সেন্টারে পাঠানো হয়।
শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) সুশান্ত কুমার মহাপাত্র বলেন, সোমবার সকাল ৯টায় করোনা আক্রান্ত ওই নারীকে আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সিলেট বিভাগের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, সুনামগঞ্জের এক নারীর শরীরে রোববার পরীক্ষার পর করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। যেহেতু আক্রান্ত নারী ওসমানী মেডিকেলের গাইনি বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন তাই ওই বিভাগ ১৪ দিনের জন্য লকডাউন করা হয়েছে।
Advertisement
প্রসঙ্গত, অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত নারায়ণগঞ্জ এখন দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়ানোর কেন্দ্রে (এপিসেন্টার) পরিণত হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি সেখান থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণও পাওয়া গেছে। শিল্প-কারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য প্রসিদ্ধ নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন জেলার মানুষের বসবাস।
নারায়ণগঞ্জ থেকে সংক্রমণ ছড়ানো ঠেকাতে গত ৮ এপ্রিল পুরো জেলা লকডাউন করা হয়। কিন্তু সেটা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। লকডাউনের মধ্যেই শত শত মানুষ নারায়ণগঞ্জ থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছেন। তাদের অনেকেই বিভিন্ন জেলায় করোনায় আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিতও হয়েছেন। এ অবস্থায় গত ১১ এপ্রিল সিলেট জেলা ও গত ১২ এপ্রিল সুনামগঞ্জ জেলা লকডাউন ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন।
ছামির মাহমুদ/এএম/এমএস