কৃষি ও প্রকৃতি

করোনায় ভেঙে গেছে ফুল চাষিদের স্বপ্ন

করোনাভাইরাসের প্রভাবে স্বপ্ন ভেঙে গেছে ফরিদপুরের ফুল চাষিদের। সম্প্রতি সারাদেশের সাথে ফরিদপুরের যোগাযোগ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন তারা। একের পর এক বন্ধ হয় জাতীয় দিবস পালন, বন্ধ হয়ে যায় পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান। এতে ক্রেতা সংকটে বিক্রি করতে পারছেন না বাগানে উৎপাদিত ফুল। বাধ্য হয়ে ফুল তুলে ফেলে দিতে হচ্ছে।

Advertisement

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, জেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ১০ হেক্টরের বেশি জমিতে দেশি ও বিদেশি ফুল জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা, গোল্ডেন স্টিক, রজনীগন্ধা, গোলাপসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল চাষ হয়েছে।

সদর উপজেলার আলীয়াবাদের কয়েকটি বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন জাতীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় ফুল বিক্রি করতে না পারায় গাছের ফুল গাছেই শুকিয়ে যাচ্ছে। কিছু বাগানের ফুল ছিড়ে ফেলে দিতে হচ্ছে। ফুল বিক্রি করতে না পারায় শ্রমিকদের বেতনও দিতে পারছেন না তারা।

উপজেলার গদাধর ডাঙ্গীর চাষি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ফুলকে কেন্দ্র করেই আমাদের সব কিছু। অথচ ফুল বিক্রি করতে পারছি না। ফুল গাছে শুকিয়ে যাচ্ছে। গাছ বাঁচিয়ে রাখার জন্য ফুল ছিড়ে ফেলে দিচ্ছি। শ্রমিকদের টাকাও দিতে পারছি না। সরকারি সহযোগিতা ছাড়া আর ঘুরে দাঁড়াতে পারব না।’

Advertisement

আলীয়াবাদের চাষী লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘পড়ালেখা শেষ করে চাকরি না পেয়ে অনেকের পরামর্শে ফুল চাষে এগিয়ে আসি। ২-৩ বছর পর বেশ ভালো আয়ও হয়েছে। করোনা এখন আমার স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে। জানি না কিভাবে ঋণের টাকা পরিশোধ করব।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘চাষিরা বিভিন্ন দিবস সামনে রেখে ফুল চাষ করে। তবে সারাবছরই ফুলের চাহিদা থাকে। মার্চ-এপ্রিল মাসে চাহিদা বাড়ে। ফুল চাষ করে জেলার অনেক চাষি স্বাবলম্বী হয়েছেন। কিন্তু করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এসব চাষিকে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

বি কে সিকদার সজল/এসইউ/পিআর

Advertisement