লাইফস্টাইল

বৈশাখে লেখা প্রেমের চিঠি নির্জনে পড়ে নিও

আজ চৈত্র সংক্রান্তি, কাল পহেলা বৈশাখ। এমন দিনে কত কত আয়োজন থাকে প্রতিবছর। চৈত্র সংক্রান্তির মুখরোচক সব খাবার, ঘরদোর সাজিয়ে বৈশাখকে স্বাগত জানানো। লালপেড়ে সাদা শাড়ি আর রেশমি চুড়ি কেনা, ছেলেদের পাঞ্জাবি আর ফতুয়া। সেসব কিছুই নেই এবছর। বৈশাখের সকালে সেজেগুঁজে ঘুরতে বের হওয়া হবে না একেবারেই। বৈশাখি মেলার তো প্রশ্নই আসে না! বরং ঘরের ভেতরেই কাটিয়ে দিতে হবে বাংলা বছরের প্রথম দিনটি।

Advertisement

নতুন বছরটি যেন কল্যাণ বয়ে আনে, ঘরের কোণে চুপটি করে বসে থেকে সেই প্রার্থনাই করতে হবে। আমরা যে বড় দুঃসময় পার করছি এখন! নানা পদের ভর্তা, মাছ ভাজা আর পান্তা দিয়ে থালা সাজিয়ে বৈশাখের সকালে খাবার খাওয়া না হোক, ক’জন অসহায় মানুষকে বরং খাবার কিনে দিন। অভাবী আর অনাহারী মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। প্রতি বছরের কল্যাণ কামনা তো মানুষের জন্যই, এবার নাহয় নিজের হাতেই তা পৌঁছে দিলেন।

জীবনে কখনো কখনে এমন সময় আসে, যখন বেঁচে থাকাটাই মূখ্য হয়ে দাঁড়ায়। আমরাও এখন সেই সময়টাই পার করছি। পুরো পৃথিবীরই এখন চরম ধৈর্য পরীক্ষার সময়। এটুকু পার হলেই টিকে থাকবে মানুষ। সারি সারি লাশ ডিঙিয়ে কখনো কোনো উৎসব হয় না। দরজার বাইরেই যে ওৎ পেতে আছে মরণ নামক শ্বাপদ! যদি মানুষেরা বেঁচে থাকে, তবে আবারও উৎসবে-আয়োজনে মুখরিত হবে পৃথিবী।

এমন সময়ে প্রিয় মানুষটির পাশে না থাকতে পারলেও মন খারাপ করবেন না। আপনার সচেতনতা হয়তো এই ভয়কে একদিন জয় করবে। সারা জীবন পাশাপাশি থাকার জন্য সাময়িক দূরত্ব মেনে নেয়াই যায়, তাই নয় কি? বছর ঘুরে আবার পহেলা বৈশাখ এলে লালপেড়ে শাড়ি-রেশমি চুড়িতে রঙিন হয়ে ঘুরে বেড়ানো হবে প্রিয় মানুষের হাত ধরে। সফেদ পাঞ্জাবিতে উঠে আসবে নতুন দিনের চিত্র। বৈশাখি মেলায়, হৈ-হুল্লোড়ে কাটিয়ে দেয়া যাবে উৎসবের দিনটি।

Advertisement

কিন্তু এখন? এখন মোটেই সেই সময় নয়। এখন সময় ধৈর্য ধারণের, সচেতনতার, সহায়তার, সুস্থ থাকার ও সুস্থ রাখার। আপনার এই সময়ের ছোট ছোট ভালো কাজ আর ত্যাগের সুফল বয়ে আনবে পৃথিবী। পৃথিবীর মুক্ত আলো-বাতাসে সেদিন আর ছুটে বেড়াতে কোনো মানা থাকবে না। এখন শুধুই অপেক্ষা। প্রেম ও মানবতার বার্তা জানিয়ে এই বৈশাখে আকাশের গায়ে, বাতাসে-বাতাসে আপনার জন্য একটি চিঠি লেখা হয়েছে। চুপি চুপি পড়ে নেবেন।

এইচএন/এমকেএইচ