করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ১ কোটি ৭০ লাখ পরিবারকে নগদ আর্থিক সাহায্য দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। এজন্য ২৬ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা থেকে ২৯ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা লাগবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
Advertisement
সোমবার (১৩ মার্চ) ‘কোভিড-১৯-সরকার গৃহীত পদক্ষেপসমূহের কার্যকারিতা এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও আয় নিরাপত্তা : সিপিডির প্রাথমিক বিশ্লেষণ ও প্রস্তাব’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ প্রস্তাব দেয়া হয়।
সরকারের ঘোষণা করা বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ বিশ্লেষণ, প্রান্তিক জনগোষ্টির জন্য খাদ্য ও আয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কী ধরনের অর্থ, খাদ্য, রাজস্ব ও আর্থিক প্রণোদনা লাগতে পারে সে বিষয়ে এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে সিপিডির দেয়া বাজেট প্রস্তাবনা নিয়ে পর্যালোচনা করা হয় এই ব্রিফিংয়ে।
সর্বশেষ খানা আয় জরিপ অনুযায়ী যাদের আয় ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা তাদের সাহায্যের আওতায় আনার প্রস্তাব জানিয়ে সিপিডির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘যাদের মাসিক আয় ১০ হাজার টাকা, তাদের ক্ষতির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। আমাদের হিসাবে প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ পরিবারকে সাহায্য দেয়ার প্রয়োজন আছে। সর্ব শেষ খানা-আয় ব্যয় জরিপ বিবেচনায় নিয়ে আমরা দারিদ্য রেখায় থাকা পরিবারকে প্রতি মাসে ৮ হাজার টাকা করে দুই মাসে ১৬ হাজার টাকা দেয়ার প্রস্তাব করছি। এজন্য ২৬ হাজার ৯৬২ থেকে ২৯ হাজার ৮৫২ কোটি টাকার মতো দরকার হতে পারে। এ সাহায্য নগদে দিতে হবে।’
Advertisement
সিপিডির গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরার সময় প্রতিষ্ঠানটির রিসার্চ ফেলো তৌফিক ইসলাম বলেন, ‘আমরা দেখেছি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বড় অংশই বর্তমান সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর মধ্যে নেই। বয়স্কদের ৬৬ শতাংশ, শিশুদের ৭০ দশমিক ৬০ শতাংশ, নতুন মা হওয়া নারীদের ৭৯ দশমিক ১০ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের ৮১ দশমিক ৫০ শতাংশ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে নেই।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান কাঠামোর মধ্যে যদি কর্মসূচি চালানো হয়, তাহলে ক্ষতিগ্রস্তদের বড় অংশ নিরাপত্তা পাবেন না। বিশেষ করে যারা অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজ করেন তারা এখনও পর্যন্ত সামাজিক নিরাপত্তার মধ্যে আসেননি, সেটা চিন্তার বিষয়। আর একটা বড় চিন্তার বিষয় যারা বিদেশে কাজ করেন, তারা হয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ৮৫ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজে আছেন।
‘আমাদের সামাজিক নিরাপত্তার যেসব কর্মসূচি তা গ্রামের জন্য তৈরি করা। শহরের যারা দরিদ্র মানুষ আছেন বা প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত তাদের অন্তর্ভুক্ত করা চ্যালেঞ্জ। অনেক জায়গায় সাহায্য দেয়ার জন্য স্থানীয় সরকারভিত্তিক তালিকা করা হয়। সেই তালিকা অনুযায়ী বড় অংশকে সাহায্য দেয়া যাবে না কি সন্দেহ আছে’-বলেন তৌফিক ইসলাম।
এমএএস/এসআর/এমকেএইচ
Advertisement