করোনায় থমকে গেছে পৃথিবী। থমকে গেছে সব। বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই চলছে লকডাউন। অপ্রয়োজনে নাগরিকদের ঘরের বাইরে বের হওয়ার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বন্ধ হয়েছে সিনেমা-নাটকের শুটিংও। ঘরে অবস্থান করতে হচ্ছে সিনেমার কলাকুশলীদের।
Advertisement
ফলে কর্মহীন হয়ে ঘরে বসে থাকা কলাকুশলীদের আর্থিক সাহায্য দিতে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রথম সারির অভিনেতা-অভিনেত্রীরা।
ছবির নাম ‘ঝড় থেমে যাবে একদিন’৷ এটি পরিচালনা করছেন অরিন্দম শীল। সঙ্গে রয়েছেন পদ্মনাভ দাশগুপ্ত।
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের অভিনয়শিল্পী ও বলিউড মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চনকে নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও সম্প্রতি সামনে এসেছে। সেখানে টেকনিশিয়ানদের পাশে থাকার বার্তা দেয়া হয়েছে।
Advertisement
এই ভিডিও নজরে আসে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি এ থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওপার বাংলার কলাকুশলীদের জন্য ছবি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন। এমনকী করোনার আবহে তিনি একটি গানও রচনা করেছেন। গানের প্রথম লাইন ‘ঝড় থেমে যাবে একদিন’৷
এরপরই প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমনের সঙ্গে এ নিয়ে বার্তা আদানপ্রদান করেন মমতা। তার কথায় গান সুরারোপ করেন সুমন। এ নিয়েই তৈরি হচ্ছে স্বল্পদৈর্ঘ্যের সিনেমা।
ছবিতে অভিনয় করছেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, নুসরাত জাহান, আবির চট্টোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, কোয়েল মল্লিক, মিমি চক্রবর্তী, রুক্মিণী মৈত্রসহ টলিউডের নামজাদা শিল্পীরা
লকডাউনে কীভাবে তৈরি হচ্ছে এই ছবি- এমন প্রশ্নে প্রবীণ অভিনেতা পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, চিত্রনাট্য তৈরি করে প্রত্যেকের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সকলে বাড়িতে বসেই শুটিং করছে। আমার অংশগুলো ছেলে মোবাইলে তুলে দিয়েছে। আমি শুধু ওকে বলে দিয়েছি আলো এবং ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল সম্পর্কে।
Advertisement
তিনি বলেন, আমি সপরিবার বাড়িতে আটকে রয়েছি। এই পরিস্থিতিতে সেটাই কর্তব্য। এখনকার ঘটনাক্রম যেমন অভূতপূর্ব, তেমনই নতুন এভাবে ছবি তৈরির অভিজ্ঞতা। অতীতে কখনো এই পদ্ধতিতে শুটিং করার প্রয়োজন হয়নি।
একইভাবে প্রসেনজিৎ থেকে কোয়েল, সবাই বাড়িতে কাউকে দিয়ে শুট করিয়ে ছবি পাঠিয়ে দিচ্ছেন। বাকি কাজ পরিচালকের।
জানা গেছে, ছবির কাহিনিতে তুলে ধরা হয়েছে করোনাভাইরাসের ফলে উদ্ভূত সংকটকে। বৃদ্ধ বাবা ও মেয়ে হঠাৎ লকডাউনের জেরে আটকে পড়েছেন ভিন্ন জায়গায়। একে অপরের সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না। এই দূরত্বের ফলে সংকট ঘনীভূত হয়। দুজনই প্রচণ্ড উদ্বেগের মধ্যে পড়েন। প্রশাসন ও চিকিৎসকের সাহায্য পান তারা। শেষে বাবা-মেয়ের সাক্ষাৎ ঘটে।
ছবিতে বার্তা দেয়া হয়েছে, করোনা মোকাবিলায় থাকতে হবে ঘরেই। মেনে চলতে হবে সামাজিক দূরত্ব৷
মিনিট দশেকের এই ছবির সম্পাদনার কাজ চলছে জোরকদমে। পরিচালক জানিয়েছেন, এই ছবির মাধ্যমে বিভিন্ন সংস্থার কাছে সাহায্যের আবেদন রাখা হবে। সেই সংস্থাগুলোর লোগো ব্যবহার করা হবে ছবিতে। অর্থের পুরোটাই তুলে দেয়া হবে কলাকুশলীদের হাতে।
বিএ/পিআর