বরিশাল নগরীসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে গত কয়েকদিনে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে। মেডিকেলের করোনা ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন পাঁচজন। এর মধ্যে নমুনা পরীক্ষায় দুই ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এ অবস্থায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বরিশাল জেলাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
Advertisement
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলা প্রশাসক এক গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ আদেশ দেন। এর আগে জেলা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভা শেষে জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বরিশাল জেলা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। জেলায় জনসাধারণের প্রবেশ এবং বের হওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত জাতীয় ও আঞ্চলিক সড়ক-মহাসড়ক এবং নৌপথে অন্য কোনো জেলা থেকে কেউ বারশালে প্রবেশ অথবা বের হতে পারবেন না।
জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান জানান, মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। তবে জরুরি পরিষেবা, চিকিৎসা, কৃষিপণ্য, গবাদিপশুর খাদ্য, খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহ, সরবরাহ ও গণমাধ্যমকর্মীরা এর আওতার বাইরে থাকবেন।
Advertisement
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন জানান, জেলায় দুজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের বাড়ি বাকেরগঞ্জ উপজেলায়। বয়স ৬৫ বছর। অপরজনের বাড়ি মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায়। তার বয়স ৬০ বছর। জেলায় হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন সাতজন।
ডা. মনোয়ার হোসেন জানান, গত কয়েক দিনে অনেকেই ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থান থেকে বরিশালে এসেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তাদের শনাক্ত করে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এছাড়া গত কয়েক দিনে নগরী ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম বাকির হোসেন জানান, মেডিকেলের করোনা ইউনিটে বর্তমানে ৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। নমুনা পরীক্ষায় দুজনের পজেটিভ পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত করোনা ইউনিটে ভর্তি হয়েছিলেন ২৮ জন। এর মধ্যে দুজন মারা গেছেন। ২০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ মার্চ সকালে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা যাওয়া ৪০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির বাড়ি পটুয়াখালী সদর উপজেলার গোহানগাছিয়া গ্রামে। এর আগে ২৮ মার্চ রাতে একই ইউনিটে ৪৫ বছর বয়সী এক নারীর মৃত্যু হয়। তার বাড়ি বরিশাল নগরীতে। এছাড়া বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় তিনজন ও আগৌলঝাড়া উপজেলায় আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
Advertisement
অন্যদিকে আগৈলঝাড়া উপজেলায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একজন নারী ও একজন যুবক। গত ১ এপ্রিল মারা যাওয় ওই নারীর বয়স ৪০ বছর। স্থানীয়রা জানান, কয়েকদিন ধরে তার জ্বর ও কাশি ছিল। মৃত্যুর আগে ওই নারী বার বার বমি করছিলেন। গত ৮ এপ্রিল একই উপজেলার পূর্ব বাগধা গ্রামে ৩৫ বছর বয়সী এক যুবকের মৃত্যু হয়। তিনি জ্বর, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন বলে তার স্বজনরা জানিয়েছেন।
সাইফ আমিন/এফএ/এমএস